মধ্যরাতে ঘুমভাঙা কি ভয়াবহ রোগের লক্ষণ? সতর্ক করে যা বললেন চিকিৎসক
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০৮ এএম
মধ্যরাতে বা রাত ১টা বা ২টার দিকে হঠাৎ করে ঘুম ভেঙে যাওয়া হচ্ছে শারীরিক চাপের একটি কম পরিচিত কারণ। শরীর অত্যন্ত চাপে থাকার খুবই সাধারণ লক্ষণ এটি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সঞ্জয় ভোজরাজ জানিয়েছেন, এমনটা হওয়া শরীরের প্রাথমিক স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য দায়ী। যা সকালের স্বাভাবিক সময় ছাড়া অন্য সময়ে ঘটে থাকে।
এ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ব্যাখ্যা করেছেন যে, রাতের বেলায় হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়া কীভাবে মানসিক চাপের গুরুত্বপূর্ণ জৈবিক সংকেত। আর রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার ব্যাপারে এ চিকিৎসকের পরামর্শ তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে হিন্দুস্তান টাইমস। এ ব্যাপারে এখন জেনে নেয়া যাক-
উচ্চ চাপের লক্ষণ:
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সঞ্জয় বলেন, শরীরে চাপের একটি লক্ষণ হচ্ছে মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া, আর যা অধিকাংশ মানুষ উপেক্ষা করে। এ জন্য আপনি যখন চাপে থাকেন, তখন কর্টিসলের মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায় পৌঁছায়, যা অনুপযুক্ত সময় হতে পারে। সাধারণত, ঘুম থেকে উঠার ঠিক আগে কর্টিসলের মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকার কথা। কিন্তু হঠাৎ করে যদি মধ্যরাতে বা রাত ১টা, ২টায় ঘুম ভেঙে যায় এবং তখন আর ঘুমাতে না পারেন, তাহলে শরীর আপনাকে ইঙ্গিত দিচ্ছে, আপনি চাপে আছেন।
এ চিকিৎসক জানিয়েছেন, চাপ উপেক্ষিত করার লক্ষণগুলোর একটি উদ্বেগ, বিরক্ত, ক্লান্তি নয়- তবে মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া। অধিকাংশ মানুষ এটি স্বাভাবিক বলে অবহেলা করেন। কিন্তু শারীরবৃত্তীয়ভাবে এটি স্নায়ুতন্ত্রের সঙ্গে লড়াই করার স্পষ্ট সংকেতগুলোর একটি।
মধ্যরাতে ঘুম ভাঙার কারণ:
এ ব্যাপারে ডা. সঞ্জয় বলেন, শরীর রাতারাতি প্যারাসিমপ্যাথেটিক (বিশ্রাম ও মেরামত) অবস্থায় থাকা উচিত। কিন্তু আপনার স্ট্রেস হরমোনগুলো যখন উচ্চ মাত্রায় থাকে, প্রদাহ, অস্থির রক্তে শর্কার পরিমাণ, ঘুমের সময় কম থাকা বা আবেগগত অতিরিক্ত চাপ- তখন কর্টিসলের মাত্রা ভুল সময় বেড়ে যায়। সেই বেড়ে যাওয়া আপনাকে রাত ১-৩টার দিকে ঘুম থেকে তুলে ফেলে।
সবশেষ এ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, এটি এলোমেলো সময় ঘুম থেকে উঠার মতো মনে হতে পারে। কিন্তু এটি একটা বিপাকীয় বিপদ, যেমন লিভার অতিরিক্ত কাজ করে, রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায়, কর্টিসল বেড়ে যায় অথবা স্নায়ুতন্ত্রজনিত সমস্যা। এসবের চিকিৎসা গুরুত্বপূর্ণ। এসব আপনাকে ইঙ্গিত করে যে, শরীর আপনার ধারণার থেকেও বেশি চাপ বহন করছে। আপনার মনোযোগ আকর্ষণের জন্যই এমন হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।