ডোপামিন ডিটক্স করলে সত্যিই মন শান্তিতে ভরে যায়?
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৪৪ পিএম
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মানসিক স্বাস্থ্য ও উৎপাদনশীলতা নিয়ে আলোচনায় খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে 'ডোপামিন ডিটক্স'। যদিও এর নাম থেকে মনে হতে পারে যে, এটি শরীর থেকে ডোপামিন নামক নিউরোট্রান্সমিটারকে সম্পূর্ণভাবে বের করে দেওয়া। আসলে বাস্তবে ধারণাটি মোটেও ঠিক নয়। ডোপামিন ডিটক্স হলো— এক ধরনের আচরণগত থেরাপি কিংবা অভ্যাস, যার মূল উদ্দেশ্য হলো— অতিরিক্ত উদ্দীপনা কমিয়ে মনকে শান্ত করা এবং জীবনে আরও মনোযোগ ফিরিয়ে আনা।
ডোপামিন এক ধরনের নিউরোট্রান্সমিটার, যা মস্তিষ্কে আনন্দ, পুরস্কার, অনুপ্রেরণা এবং শেখার অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যখন আমরা কোনো আনন্দদায়ক কাজ করি, তখন মস্তিষ্ক ডোপামিন নির্গত করে থাকে। সচেতনভাবে সেসব কার্যকলাপ থেকে সাময়িক বিরতি নেওয়া, যা দ্রুত ও সহজে প্রচুর পরিমাণে ডোপামিন নির্গত করে।
ডোপামিনের লক্ষ্য হলো—
১. স্নায়ুতন্ত্রকে বিশ্রাম দেওয়া: মস্তিষ্ককে অতিরিক্ত উদ্দীপনা থেকে মুক্তি দেওয়া।
২. পুরস্কারের থ্রেশহোল্ড বাড়ানো: সাধারণত দৈনন্দিন কাজগুলো থেকেও যেন আবার আনন্দ ও সন্তুষ্টি পাওয়া যায়, সেই ক্ষমতা তৈরি করা।
ডোপামিন ডিটক্সের মাধ্যমে সাধারণত নিম্নোক্ত উপকারগুলো পাওয়া যায়—
১. মানসিক শান্তি: কম উদ্দীপনার কারণে উদ্বেগ ও মানসিক চাপ হ্রাস পায়। আর দ্রুত ডোপামিন প্রদানকারী কাজগুলো এড়িয়ে গেলে মনোযোগ দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়ে এবং প্রোডাক্টিভিটি বা উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
২. জীবনের প্রতি সন্তুষ্টি: সাধারণ কাজ, যেমন— বইপড়া, হাঁটা কিংবা প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানো। এসব থেকেও আনন্দ খুঁজে পাওয়ার ক্ষমতা তৈরি হয়। আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করে। সামাজিক মাধ্যম, গেম কিংবা জাঙ্কফুডের প্রতি আসক্তি কমাতে এটি সহায়ক ভূমিকা রাখে।
কীভাবে ডোপামিন ডিটক্স নিয়ন্ত্রণ করবেন
ডোপামিন ডিটক্স একটি নমনীয় অভ্যাস। এটি সাধারণত কয়েক ঘণ্টা থেকে শুরু করে একদিন বা দুদিনের জন্য করা যেতে পারে। কোন কোন অভ্যাসগুলো আপনার জীবনে অতিরিক্ত ডোপামিন এবং আসক্তি তৈরি করছে, তা চিহ্নিত করা। সাধারণ ক্ষেত্রগুলো হলো— সামাজিক মাধ্যম, বিনোদনমূলক ভিডিও, নোটিফিকেশন। আর এসব কাজ একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ঠিক করতে হবে। যেমন—যে কোনো একদিন অথবা প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টার পর।
এ ছাড়া বিকল্প কাজ করতে পারেন। বইপড়া , ধ্যান বা মেডিটেশন করা, প্রকৃতির মাঝে হাঁটা বা ব্যায়াম করা এবং ডায়েরি লেখা কিংবা সৃজনশীল কাজ করা।
আর কঠোরভাবে সব কিছু বন্ধ না করে ধীরে ধীরে শুরু করা। যেমন— প্রথম দিন শুধু সোশ্যাল মিডিয়া এড়িয়ে চলুন, পরের দিন জাঙ্ক ফুড। ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে এর সুফল পাওয়া যাবে।