Logo
Logo
×

লাইফস্টাইল

কফি প্রেমীদের জন্য হার্ভার্ড চিকিৎসকের ৭ পরামর্শ

Icon

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৪৫ পিএম

কফি প্রেমীদের জন্য হার্ভার্ড চিকিৎসকের ৭ পরামর্শ

অনেকেই কফি ছাড়া দিন শুরুই করতে পারেন না। সকালে কফির ঘ্রাণে ঘুম ভাঙে, রাতে এক কাপ কফির চুমুকেই শেষ হয় দিনের ক্লান্তি— তার মাঝেও থাকে ছোট ছোট কফি ব্রেক। যদিও কফি শরীরের জন্য উপকারী, কিন্তু সঠিকভাবে না খেলে তা উল্টো ক্ষতির কারণ হতে পারে।

সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী ডা. ত্রিশা পাশরিচা কফি পান নিয়ে ৭টি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত পরামর্শ দিয়েছেন—

১. প্রতি কাপে এক চা–চামচের বেশি চিনি নয়

২০২২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা চিনি ছাড়া কফি পান করেন, তারা কফি না খাওয়াদের তুলনায় দীর্ঘায়ু হন। এমনকি যারা প্রতিদিন চার কাপের বেশি কফি পান করেন, তারাও একই সুবিধা পান। তবে যারা এক চা–চামচের মতো অল্প চিনি ব্যবহার করেন, তারাও একই উপকারিতা পান।

২. অতিপ্রক্রিয়াজাত ক্রিমার এড়িয়ে চলুন

বেশিরভাগ কফি ক্রিমারে প্রধান উপাদান থাকে উদ্ভিজ্জ তেল (যেমন পাম বা সয়াবিন তেল) এবং প্রতি টেবিল চামচে ১–২ চা–চামচ চিনি। পাশরিচা পরামর্শ দেন, দোকানে ক্রিমার কেনার আগে লেবেল ভালোভাবে পড়ুন। বিকল্প হিসেবে কফিতে একটু দারুচিনি মিশিয়ে নিলে পাবেন স্বাস্থ্যকর ও মজাদার স্বাদ।

৩. কৃত্রিম মিষ্টি নিয়ে ভাবুন দুইবার

২০২২ সালের আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, কৃত্রিম মিষ্টি কফির উপকারী প্রভাব কমিয়ে দিতে পারে। এমনকি ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যগত বিষয় বিবেচনা করলেও একই ফল পাওয়া গেছে। গবেষকরা মনে করেন, সবাইয়ের জন্য কৃত্রিম মিষ্টি নিরাপদ বিকল্প নয়।

৪. ফ্রেঞ্চ প্রেস কফি সীমিত পরিমাণে খান

ডা. পাশরিচা বলেন, দিনে ৩–৫ কাপ এসপ্রেসো বা ৬ কাপের বেশি ফ্রেঞ্চ প্রেস কফি পান করলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। কারণ এতে থাকা ডিটারপিনস নামক যৌগ লিভারের খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) অপসারণের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তবে পেপার ফিল্টার ব্যবহার করলে এই ক্ষতিকর যৌগ ধরা পড়ে যায় এবং তা কফিতে মিশে না। ইনস্ট্যান্ট কফি ও কফি পডেও ছোট ফিল্টার ব্যবহৃত হয়, তাই এগুলো তুলনামূলক নিরাপদ।  

আরও পড়ুন
৫. ইনস্ট্যান্ট বা ডিক্যাফ কফিও কার্যকর

২০২২ সালের গবেষণায় বলা হয়েছে, গ্রাউন্ড কফি, ইনস্ট্যান্ট কফি, এবং ডিক্যাফ কফি—সব ধরনের কফিতেই প্রায় একই স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।

৬. দুপুরের আগেই কফি খাওয়ার অভ্যাস

২০২৫ সালের এক গবেষণায় ৪০ হাজারেরও বেশি আমেরিকানকে পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, যারা দুপুরের আগেই কফি পান করেন, তারা সারাদিন বা সন্ধ্যায় কফি পানকারীদের তুলনায় ১৬% কম মৃত্যুঝুঁকিতে থাকেন।

দুপুরের পর অতিরিক্ত কফি পান শরীরে মেলাটোনিন হরমোন নিঃসরণ ৩০% পর্যন্ত কমিয়ে দেয়, যা ঘুমের মান ও শরীরের জৈবঘড়ি নষ্ট করে দিতে পারে।

৭. হজমের প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক

কফি পাকস্থলীতে পৌঁছেই গ্যাস্ট্রোকলিক রিফ্লেক্স সক্রিয় করে, যার ফলে অনেকেরই খাবারের পর টয়লেটে যাওয়ার তাগিদ অনুভূত হয়। পাশরিচা বলেন, এটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর একটি প্রক্রিয়া। তবে যদি এমনটা প্রায়ই হয়, তাহলে দৈনন্দিন রুটিন সেই অনুযায়ী ঠিক করা উচিত।

সবশেষে ডাক্তার ত্রিশা পাশরিচা বলেন, আপনি যদি কফি ভালোবাসেন, তবে অভ্যাসটা একটু বুঝে নিন। ঠিকভাবে পান করলে কফি হতে পারে আপনার শরীর ও মনের বন্ধু।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার