Logo
Logo
×

লাইফস্টাইল

ঘুমের ওষুধে কমছে আয়ু, সতর্ক করলেন চিকিৎসকরা

Icon

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:১১ পিএম

ঘুমের ওষুধে কমছে আয়ু, সতর্ক করলেন চিকিৎসকরা

ঘুমের ওষুধ নিয়মিত সেবন আয়ু কমাতে পারে—এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন চিকিৎসকরা। দ্য ল্যানসেট রিজিওনাল হেলথ আমেরিকাস-এ প্রকাশিত এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মধ্যবয়সী ও প্রবীণ ব্যক্তিরা যদি ঘুমের ওষুধ সেবন বন্ধ করেন, তাহলে তারা আরও সুস্থভাবে বার্ধক্যে পা রাখতে পারেন এবং চিকিৎসা ব্যয়ও উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারেন।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ঘুমের ওষুধ বন্ধ করলে ঝুঁকি প্রায় ৯ শতাংশ পর্যন্ত কমে, মানসিক অবক্ষয়ের হার ২ শতাংশ পর্যন্ত ধীর হয়, এবং গড় আয়ু অন্তত এক মাসেরও বেশি বাড়ে। পাশাপাশি ওষুধ ও চিকিৎসা খাতে হাজার হাজার ডলার সাশ্রয় সম্ভব। 

এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শেফার সেন্টার ফর হেলথ পলিসি অ্যান্ড ইকনমিকসের গবেষক হেনকে হ্যাভেন জনসন। তিনি বলেন, বয়স্কদের মধ্যে ঘুমের ওষুধের ব্যবহার কমানো শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। এতে তারা আরও নিরাপদ ও সক্রিয় জীবনযাপন করতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রে ঘুমের ওষুধ ব্যবহার কতটা সাধারণ

গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সি প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ নিয়মিত ঘুমের ওষুধ ব্যবহার করেন—যদিও চিকিৎসকরা দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে বারবার সতর্ক করে আসছেন। 

৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সি প্রায় অর্ধেক মানুষ অনিদ্রায় ভোগেন, যা বিষণ্ণতা, উদ্বেগ, হৃদরোগ ও ডিমেনশিয়ার মতো অন্যান্য শারীরিক সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কিত। গবেষকরা জানিয়েছেন, ঘুমের ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করলে এসব ঝুঁকি আরও বেড়ে যেতে পারে—বিশেষ করে স্লিপওয়াকিং ও দুঃস্বপ্নের প্রবণতা বাড়ে।  

আরও পড়ুন
৬৫ থেকে ৭৪ বছর বয়সিদের সবচেয়ে বেশি উপকার  

ফেডারেল হেলথ অ্যান্ড রিটায়ারমেন্ট স্টাডির তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা দেখেছেন, ৬৫ থেকে ৭৪ বছর বয়সি অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ঘুমের ওষুধ বন্ধ করার পর সবচেয়ে বেশি উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। এই বয়সিদের ক্ষেত্রে শারীরিক নিরাপত্তা ও মানসিক সতর্কতা—দুটিই বেড়েছে, পাশাপাশি আয়ুও তুলনামূলক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। 

ঘুমের ওষুধের বিকল্প: কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি

বিশেষজ্ঞদের মতে, কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি ফর ইনসমনিয়া ঘুমের ওষুধের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর ও নিরাপদ বিকল্প। সিনিয়র গবেষক ড. জেসন ও তার সহকর্মীরা জানিয়েছেন, এই থেরাপিতে ঘুমের ধরণ ও চিন্তাধারায় পরিবর্তন আনা হয়, যা দীর্ঘমেয়াদে অনিদ্রা কমাতে সাহায্য করে—কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই।

গবেষণার ফলাফল থেকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি অনিদ্রা নিয়ন্ত্রণে ঘুমের ওষুধের ওপর নির্ভরশীলতা বিপজ্জনক হতে পারে। তাই প্রবীণদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শে বিকল্প পদ্ধতি, বিশেষ করে কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি ফর ইন থেরাপির মতো নন-ড্রাগ পদ্ধতি গ্রহণ করা। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, লাখো প্রবীণ মানুষ যদি এই বিকল্প পথে হাঁটেন, তবে তাদের মানসিক সতর্কতা, শারীরিক নিরাপত্তা ও সামগ্রিক জীবনমান—সব ক্ষেত্রেই উন্নতি ঘটবে।

সূত্র: সামাটিভি

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার