চুলকানি শুধু অ্যালার্জি বা চর্মরোগ নয়, হতে পারে যেসব মারাত্মক রোগ
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
আমরা সবাই চুলকানিকে সাধারণ একটি সমস্যা মনে করি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নানা ধরনের চর্মরোগের জন্য চুলকানি হয়ে থাকে। একজিমা, স্ক্যাবিস, অ্যালার্জি, ছত্রাক সংক্রমণজনিত এর মূল কারণ। হালকা অ্যালার্জি, সংক্রমণ বা পোকামাকড়ের কামড়ের কারণেও অনেক সময় চুলকানি হয়ে থাকে। বিভিন্ন কারণে চুলকানি হয়ে থাকলেও অনেক সময় এটি শুধু চুলকানির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। কারণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুও ডেকে আনে ভয়ানক রোগের ইঙ্গিত দিয়ে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, চুলকানি কোন কারণে মৃত্যু ডেকে আনতে পারে—
লিভার সমস্যা
দীর্ঘস্থায়ী লিভার রোগে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে চুলকানি খুবই সাধারণ একটি লক্ষণ। নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার রোগ এবং অ্যালকোহলিক লিভার রোগের মতো ক্ষেত্রে চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ বিষয়ে আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজির পরামর্শ অনুযায়ী, যদি লিভার রোগের লক্ষণ হয় চুলকানি, তাহলে প্রায়ই হাতের তালুতে শুরু হয় এবং তা শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে।
দাদ
আর চুলকানি হচ্ছে দাদের একটি প্রাথমিক লক্ষণ। এর সঙ্গে ব্যথা ও ঝিনঝিন থাকতে পারে। শরীরের একপাশে ফোসকার মতো ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে, যা মূলত বগল ও মুখে দেখা যায়।
ক্যানসার
চুলকানি থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে আবার ক্যানসার থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে লিভার ক্যানসার, পিত্তথলির ক্যানসার, হেমাটোপয়েটিক সিস্টেমের ক্যানসার এবং ত্বকের ক্যানসার।
ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও চুলকানি হয়ে থাকে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রায় ৩৬ শতাংশ মানুষের চুলকানি হতে পারে, যা সাধারণত রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণের অভাবে হয়ে থাকে। এই চুলকানির আবার ধরনও রয়েছে। যেমন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে হওয়া, মাথার ত্বকে হওয়া।
কিডনি সমস্যা
দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের প্রধান লক্ষণ চুলকানি। ত্বকের চুলকানি প্রায়ই কষ্ট, বিষণ্নতা ও জীবনযাত্রার মান হ্রাসের সঙ্গে যুক্ত থাকে। আর কিডনি কেয়ার ইউকে অনুসারে, কিডনি রোগে আক্রান্ত প্রায় অর্ধেক মানুষের ত্বকে চুলকানি হয়, যা ডায়ালাইসিস গ্রহণকারী অধিকাংশ রোগীকেও প্রভাবিত করে থাকে।
থাইরয়েড রোগ
চুলকানি হওয়া কখনো কখনো থাইরয়েড রোগের লক্ষণ হয়ে থাকে। আর থাইরয়েড রোগ বলতে বোঝায়— ঘাড়ের থাইরয়েড গ্রন্থির কাজের প্রক্রিয়ার সমস্যাকে। এ রোগের অন্যান্য লক্ষণ ব্যক্তিভেদে ভিন্নও হতে পারে। তবে সাধারণত চুল, ত্বক ও নখকে প্রভাবিত করে থাকে চুলকানি।
অটোইমিউন রোগ
অটো ইমিউন রোগ হচ্ছে এমন রোগ, যা অভিযোজিত ইমিউন সিস্টেমের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া থেকে উৎপত্তি হয়। যেখানে শরীরের সুস্থ ও কার্যকরী অংশগুলোকে টার্গেট করে থাকে এবং আক্রমণ করে যেন তারা বাইরের জীব। এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কিছু অটোইমিউন রোগ এবং অটোইমিউনসংশ্লিষ্টতা ত্বকের ক্ষেত্রে চুলকানির সাধারণ লক্ষণ। এর মধ্যে অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস, সোরিয়াসিস, অটোইমিউন বুলাস রোগ, ডার্মাটাইটিস হারপেটিফর্মি, লুপাস এরিথেমাটোসাস এবং সজোগ্রেন সিনড্রোমের মতো সংযোগকারী টিস্যু রোগ। এ অবস্থার ওপর ভিত্তি করে অটোইমিউন রোগ নির্দেশকারী চুলকানি ত্বকের সঙ্গে স্ফীত হতে পারে, যা অনেক সময় আঁশযুক্ত হয়ে থাকে।