Logo
Logo
×

খেলাধুলা

নিস্তব্ধ করা যায়নি লাখো দর্শকদের, এবার শিরোপা ভারতের

Icon

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৩৬ এএম

নিস্তব্ধ করা যায়নি লাখো দর্শকদের, এবার শিরোপা ভারতের

ফাইনালে শিরোপা ছুঁতে রীতিমতো রেকর্ড গড়তে হতো দক্ষিণ আফ্রিকার। আর সেখানে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে ৫২ রানে হেরেছে প্রোটিয়া মেয়েরা। রান তাড়ায় প্রোটিয়া অধিনায়ক লরা ওয়লভার্টের শতরানের ইনিংসের পরও—শেষ হাসি হেসেছে ভারত। আর তাতেই নারী বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন হয়ে, ঘরের মাঠে শিরোপা জয়ের আক্ষেপ ঘুচলো ভারতের।

দু’বছর আগে আহমেদাবাদে বিশ্বকাপ ফাইনালের আগের দিন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স জানিয়েছিলেন, তারা স্বাগতিক দর্শককে চুপ করিয়ে দিতে চান। সেই কাজে সফলও হয়েছিলেন। 

নাভি মুম্বাইয়ে আজ প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শেফালি ভর্মা ও দিপ্তি শর্মার ব্যাটে ভর করে ২৯৮ রান তোলে ভারতের মেয়েরা। মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ফাইনালে এর আগে ১৬৭ রানের বেশি লক্ষ্য ছুঁয়ে জিততে পারেনি কোনো দল। তাছাড়া নারী ওয়ানডে ইতিহাসে দক্ষিণ আফ্রিকাও কখনোই এত বেশি রান তাড়া করে জিততে পারেনি। জয় পেতে কঠিন রান পাহাড়ে চড়তে হতো প্রোটিয়াদের। তারা দৃঢ়তা দেখিয়ে ২০০ রান পেরোলেও ইনিংস থেমে যায় ২৪৬ রানে।

প্রোটিয়া অধিনায়ক লরা ওয়লভার্ট। ফাইনালে খেলেন ১১ চার ও ১ ছক্কায় ৯৮ বলে ১০১ রানের ইনিংস।

টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট হারায়নি ভারত। ১০ ওভারে বিনা উইকেটে তারা তোলে ৬৪ রান। স্মৃতি মান্ধানা ও শেফালি ভর্মার জুটি ভাঙে ১০৪ রানে, স্মৃতি ফিরলে। ক্রিজ ছাড়ার আগে বাঁহাতি এই ব্যাটার ৪৫ রান করেন।

জয়ের পর ভারতীয় দলের উচ্ছ্বাস। 

জুটি ভাঙলেও ঠিকই রেকর্ড গড়েছেন দুজন। নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালে এখন পর্যন্ত উদ্বোধনী জুটিতে ভারতের সর্বোচ্চ রান—মান্ধানা-শেফালির এই ১০৪ রান।

মান্ধানা ফেরার পরও থেমে থাকেননি শেফালি। ৬ রানে জীবন পাওয়া এই ব্যাটার স্বাচ্ছন্দ্যেই এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির পথে। তবে দ্বিতীয়বার ক্যাচ তুলে দিয়ে আর রক্ষা পাননি। সুনে লুসের হাতে ধরা পড়ে ফিরতে হয় ৮৭ রানে। আউট হওয়ার আগে মারেন ৭ চার ও ২ ছক্কা।

দলকে ফাইনালে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জেমিমাহ রদ্রিগেজ আজ থিতু হয়েও সুবিধা করতে পারেননি। তিনি ফেরেন ২৪ রানে। অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর থামেন ২০ রানে, আর আমানজোত কৌর ব্যক্তিগত ইনিংসে যোগ করেন ১২ রান।


দলীয় ২৪৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নেন দিপ্তি শর্মা ও রিচা ঘোষ। তাদের জুটি থেকে আসে ৪৭ রান। শেষ পর্যন্ত রিচা ফেরেন ৩৪ রানে, আর শেষ বলে রান আউটে কাটা পড়ে দিপ্তী করেন ৫৮ রান। তাতেই ভারত পান ২৯৮ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন আয়াবঙ্গা খাকা। ৯ ওভার বল করে খরচ করেন ৫৮ রান।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে বেশ গুছানো ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার পথচলা। তাজমিন ব্রিটসকে নিয়ে দেখেশুনে সূচনা করেন লরা ওয়লভার্ট। বিপত্তি ঘটে দলীয় ৫১ রানে, যখন তাজমিন রান আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন। মূলত ধাক্কাটা তখন থেকেই শুরু প্রোটিয়াদের।

ফাইনালে হাজির ছিলেন ভারতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক রোহিত শর্মা। দেখলেন শিরোপা জয়।

পর্যায়ক্রমে আনিকা বশ, সুনে লুস, মারিজান কাপ ও সিনাল জাফতা ফেরেন। বিশেষ করে আনিকা ও কাপের ফেরাটা বেশি বিপাকে ফেলে প্রোটিয়াদের। আসরজুড়ে ধারাবাহিকভাবে কাপ মাত্র ৪ রান করতে পারেন। অন্যদিকে আনিকার ফেরাটা ছিল ডাক মেরে।

১৪৮ রানে মিডল অর্ডারের পাঁচ ব্যাটারকে ফেরানোর পরও আনেরি ডের্কসেনকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান ওয়লভার্ট। ধাক্কা সামাল দেওয়ার জন্য সবধরণের চেষ্টা চালান দুইজন। তবু দিপ্তি শর্মার বল বুঝে ওঠার আগেই স্ট্যাম্প ভেঙে দেন ডের্কসেনকে। ৩৫ রানে ফেরেন তিনি।

ভারতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন দিপ্তি শর্মা।

ডের্কসেনের পর ওয়লভার্ট ফেরাতে তখনই পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। প্রোটিয়া অধিনায়ক ৯৮ বলে ১০১ রান করেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার দশম সেঞ্চুরি। ৪১.১ ওভারে ৭ উইকেট হারানো দল তখনো ৭৮ রান দূরে। শেষ পর্যন্ত ২৪৬ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।

শিরোপা জয়ের পর জেমিমাহর উল্লাস। ভারতকে ফাইনালে তোলার নায়ক তিনিই।

ভারতের হয়ে দিপ্তি ৯.৩ ওভারে ৫ উইকেট নেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট নেন শেফালি ভর্মা, তিনি নেন ২টি। ফাইনালে ম্যাচ সেরা হয়েছেন শেফালি ভর্মা। আর টুর্নামেন্ট সেরার পুরষ্কার জিতেছেন দিপ্তি শর্মা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার