ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়াবে, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে
জাগো বাংলা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:০৯ এএম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ভোট পেছাতে কয়েকটি দল ষড়যন্ত্র করছে। তারা কারা- আপনারা জানেন। কিন্তু আপনারা কি সে সুযোগ দেবেন? বাংলাদেশের মানুষ কি সে সুযোগ দেবে? গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়াবে, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়ায় রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত পথসভায় সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন। পাঁচ দিনের সফরে সস্ত্রীক তিনি মঙ্গলবার নিজ নির্বাচনি এলাকা কক্সবাজার-১ আসনে (চকরিয়া-পেকুয়া) আসেন।
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কুতুবউদ্দিনের সভাপতিত্বে পথসভায় বক্তব্য দেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা, চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক এম মোবারক আলী, চকরিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার, বিএনপি নেতা এম আবদুর রহিম, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, জেলা মহিলা দলের সভাপতি নাছিমা আকতার প্রমুখ।
২০০৮ সালের নির্বাচন ও ওয়ান-ইলেভেন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সরকার কারচুপি করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনে। সেই নির্বাচনে গণতন্ত্রের বারোটা বাজিয়ে দেওয়া হয়েছিল। গণতন্ত্র ফিরে পেতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জনগণকে অপেক্ষা করতে হয়েছে- রক্ত দিতে হয়েছে, শহীদ হতে হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থান করতে হয়েছে। এখন আমরা ভোটাধিকার ফেরত পেয়েছি, কিন্তু প্রয়োগ করতে পারিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মাতারবাড়ি বন্দর হলে শহর হবে চকরিয়া। সেটা মাথায় নিয়েই আমাদের এগুতে হবে। বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে দ্রুত সময়ে বন্দরের কার্যক্রম সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। কারণ চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে কয়েকগুণ সক্ষমতা থাকবে মাতারবাড়ি বন্দরে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আপসহীন নেত্রী উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এ দেশের গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতার প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া। এ দেশের জনগণের ঐক্যের প্রতীক তিনি। আজ তিনি অসুস্থ। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। তার শরীরে স্লো পয়জনিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাকে বিদেশে চিকিৎসায় যেতে দেওয়া হয়নি, দেশেও চিকিৎসা ঠিকমতো নিতে পারেননি। কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে একাকিত্বে দিন কাটাতে হয়েছে। এত অত্যাচার সত্ত্বেও তিনি দুঃশাসনের সঙ্গে আপস করেননি, শেখ হাসিনার সঙ্গেও আপস করেননি। গণতন্ত্রের জন্য আজীবন লড়াই-সংগ্রাম করে গেছেন।
জামায়াতকে ইঙ্গিত করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কেউ কেউ বলছেন অমুক মার্কায় ভোট দিলে বেহেশতে যাবে- এটা কেমন কথা? ইসলাম কি ভোটে দাঁড়িয়েছে? দুনিয়ার স্বার্থে ধর্মকে বিক্রি করা নাজায়েজ। আমাদের মা-বোনদের বিভ্রান্ত করতে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। এটা সহ্য করা হবে না।
তিনি আরও বলেন, এখন যারা জান্নাতের টিকিট বিক্রি করছে, তারা নিজেরাই কোথায় যাবে আল্লাহ জানেন। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে- এমন বক্তব্য স্বাধীনতার নামে ছড়ানো যাবে না।
এদিন সকাল ১০টায় ঢাকা থেকে কক্সবাজারে পৌঁছে সালাহউদ্দিন আহমদ খুটাখালীতে পীর হাফেজ আবদুল হাইয়ের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে গণসংযোগ শুরু করেন। এরপর খুটাখালী ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয় উদ্বোধন, খুটাখালী ও ডুলাহাজারার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ ও পথসভায় বক্তব্য দেন। বিকেল পাঁচটার দিকে ডুলাহাজারার পীর হাফেজ আবদুর রশিদের কবর জিয়ারত করেন তিনি।
পরে চকরিয়ার পথসভায় বক্তব্য শেষে তার নির্বাচনি এলাকায় জামায়াতের প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ফারুকের বাড়িতে গিয়ে তার বাবার মৃত্যুতে শোক জানান এবং সব বিষয়ে পরিবারের খোঁজ খবর নেন।