‘আমাকে হারাতে জেলা বিএনপির বাজেট ১০০ কোটি’
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:০৫ এএম
পটুয়াখালী–১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, তাঁকে নির্বাচনে হারাতে জেলা বিএনপির একটি অংশ ১০০ কোটি টাকার বাজেট করেছে। তিনি বলেন, ‘ওনারা ব্যাংকার দিয়ে রাজনীতি করাবে, কনট্রাক্টর (ঠিকাদার) দিয়ে নির্বাচন করাবে। ভিপি নূরকে দিয়ে নির্বাচন করাতে চেয়েছিল টাকাও অফার করেছে সে রাজি হয়নি। পরে জাপার (জাতীয় পার্টি) রুহুল আমিন হাওলাদারকে ধরছে।’
বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার বদরপুর শহীদস্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এক নির্বাচনী সমাবেশে এসব মন্তব্য করেন তিনি। বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলা বিএনপির ভেতরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
রুহুল আমিন হাওলাদারকে নিয়ে সাবেক মন্ত্রী বলেন,‘তার তো মার্ডারসহ অনেক মামলা। একটাতেও জামিন নাই—রেজাল্ট জিরো। ওদের দিয়ে আমাকে হারানো যাবে না।’
এ সময় জেলা বিএনপির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তিনি করেছেন, সেটিকে ‘প্রমাণ–সমৃদ্ধ’ দাবি করেন। তিনি বলেন, তাঁর বক্তব্যের পক্ষে তাঁর কাছে ‘প্রচুর প্রমাণ’ রয়েছে।
আলতাফের এই মন্তব্য জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান টোটন বলেন, ‘তাঁর অভিযোগ মিথ্যা। তিনি কোনো প্রমাণ দিতে পারবেন না। এসব বক্তব্যে নেতাকর্মী বিভ্রান্ত হয়।’
জেলা বিএনপির সভাপতি স্নেহাংশু সরকার কুট্টি বলেন, ‘তিনি প্রতিনিয়ত জেলা বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলেন। এতে দলে বিভাজন আরও বাড়ছে। বয়সও আশির ওপর—কখন কী বলেন, নিজেও বোঝেন না। রুহুল আমিনকে জড়ানো উদ্দেশ্যমূলক। অথচ তিনিই রুহুল আমিনের আত্মীয়ের বাসায় দাওয়াত খেয়ে এসেছেন। তিনি বিএনপির বৈধ কমিটিকে অস্বীকার করছেন।’
প্রচারণায় তিনি আরও বলেন,‘জেলা বিএনপি বলছে, আমি নাকি ডাকিনি। দাওয়াত খাওয়ানোর জন্য ডাকব কেন? নির্বাচন করার জন্য ডাকব। আগে দেখতে হবে কে কাজের যোগ্য। যারা রক্ত দিয়েছে, জেল খেটেছে—নির্বাচন তাদের হাতেই হবে।’
দলীয় সূত্র জানায়, আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও বর্তমান সভাপতি স্নেহাংশু সরকার কুট্টির দ্বন্দ্ব দুই দশকের পুরোনো। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর থেকেই দুই ভাগে বিভক্ত জেলা বিএনপি—একপক্ষে আলতাফ, অন্যপক্ষে কুট্টি–পিনু গ্রুপ। মনোনয়ন ঘোষণার পর দুই পক্ষ ‘ঐক্যের’ ঘোষণা দিলেও নির্বাচনী মাঠে নেমেই পুরোনো দ্বন্দ্ব আবার প্রকাশ্যে চলে আসে। জেলা বিএনপির একাধিক নেতা মনে করেন—“এই কোন্দল চলতে থাকলে পটুয়াখালী–১ আসনে বিএনপির নির্বাচনী অবস্থান দুর্বলই হবে।”