‘সিনিয়র নেতাদের ড্রইংরুমে হাজিরা না দেওয়ায় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছি’
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:২০ পিএম
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লেয়াকত আলী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিষ্কার ঘোষণা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি বলেন- ‘সিনিয়র নেতাদের ড্রইংরুমে হাজিরা না দেওয়ায় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছি’।
তার এ বক্তব্য ঘিরে বাঁশখালীর রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিও বার্তায় লেয়াকত আলী বলেন, ‘৪১ বছরের রাজনৈতিক জীবনে তিনি মাঠপর্যায়ের মানুষের সঙ্গে সুখ–দুঃখ ভাগাভাগি করে চলেছেন। তিনি দাবি করেন, রাজনীতি আমাকে বারবার ছিটকে ফেললেও বাঁশখালীর মানুষ কখনো আমাকে আশাহত করেনি।’
মনোনয়ন বঞ্চনার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘সিনিয়র নেতাদের ড্রইংরুমে হাজিরা না দেওয়ায় তিনি বঞ্চিত হয়েছেন।’
তার ভাষ্যে, ‘বাংলাদেশের ড্রইংরুম পলিটিক্সে আমি বহুবার পরাজিত হয়েছি। কিন্তু আমার বিশ্বাস ছিল, বাঁশখালীবাসী আমাকে বুকে টেনে নেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্মানিত বাঁশখালীবাসী, আপনারা জানেন, আমি কৃষকের ঘরে জন্ম নেওয়া, শ্রমিকের তত্ত্বাবধানে বেড়ে উঠা একজন রাজনৈতিক কর্মী। আমার রাজনীতি আমাকে ছুড়ে ফেলে দিলেও আপনারা আমাকে বুকে টেনে না নিয়ে পারবেন না; এটা আমার বিশ্বাস ছিল।’
তাই বিগত ২২ নভেম্বর শনিবার দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় মাঠ, বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রকাশ জলদি হাই স্কুল মাঠে আমি একটি জনসভা ডেকেছিলাম। সেই জনসভায় মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত হতদরিদ্র লাখো মানুষের উপস্থিতি আমাকে প্রেরণা জুগিয়েছে। আমাকে পুনরায় আশান্বিত করেছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার স্পষ্ট ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, প্রিয় বাঁশখালীবাসী, আপনারা সেদিন আমাকে নির্বাচন করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। আমি আপনাদের পরামর্শকে আমার জন্য আদেশ মনে করে আমি সেদিন নির্বাচন করার ইঙ্গিত দিয়েছিলাম। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে পরিষ্কারভাবে আমি আপনাদের বিনয়ের সঙ্গে ঘোষণা করতে চাই, ইনশাআল্লাহ আগামী জাতীয় নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করব।
সমৃদ্ধশালী মডেল বাঁশখালী গড়ে তোলার আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমি ছেলেবেলা থেকে সমৃদ্ধশালী মডেল বাঁশখালী হিসেবে বাংলাদেশের মানচিত্রে আমার প্রিয় জন্মভূমিকে আমি প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন নিয়ে বড় হয়েছি। শুধু মডেল বাঁশখালীকে মডেল হিসেবে গড়ে তোলার একমাত্র লক্ষ্য নয়। আমার লক্ষ্য বাংলাদেশের অসহায় নিপীড়িত লাঞ্ছিত বঞ্চিত মানুষের পক্ষে আমি জাতীয় সংসদে ভূমিকা রাখতে চাই।
ভিডিও বার্তায় তিনি অভিযোগ করেন, চট্টগ্রামের প্রতি সবসময় ‘বিমাতাসুলভ আচরণ’ করা হয়।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর এবং চট্টগ্রামের মানুষের অধিকার নিয়ে আমি পার্লামেন্টে মুভমেন্ট করতে চাই। চট্টগ্রামের চাকরিহারা কর্মহারা ছেলেমেয়েদের পক্ষে আমি ভূমিকা রাখতে চাই। আপনারা আশাকরি আমাকে সহযোগিতা করবেন।’
তিনি জানান, ‘ছেলেবেলা থেকেই সমৃদ্ধশালী ও মডেল বাঁশখালী গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে বড় হয়েছেন। শুধু বাঁশখালীর উন্নয়ন নয়—দেশের বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের অধিকারের পক্ষে জাতীয় সংসদে ভূমিকা রাখাই তার লক্ষ্য।’
মানুষের সেবা করাকেই জীবনের মূল লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমি মানুষের গোলামী করে আল্লাহকে পেতে চাই। কৃষক–শ্রমিক–হতদরিদ্র মানুষের দুঃখ আমি সবচেয়ে বেশি বুঝি। তাদের পক্ষে কথা বলতেই আমি নির্বাচনে আসছি।’