Logo
Logo
×

রাজনীতি

জেন-জি ফ্যাক্টর: কিছু আসনে বিএনপি প্রার্থীদের বিষয়ে যে দাবি উঠল

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০১:২৭ এএম

জেন-জি ফ্যাক্টর: কিছু আসনে বিএনপি প্রার্থীদের বিষয়ে যে দাবি উঠল

কয়েকটি আসনে বয়স্ক প্রার্থী নিয়ে জটিলতায় পড়েছে বিএনপি। তাদের বয়স ৮০ থেকে তার উপরে। ওইসব প্রার্থী নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে সমালোচনা চলছে।

স্থানীয় নেতারা জানান, এলাকার সাধারণ মানুষ প্রধানত বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বয়োবৃদ্ধ নেতাদের নেতৃত্বদানের সক্ষমতা কমে গেছে। বিশেষ করে অভ্যুত্থান-পরবর্তী দেশের রাজনীতিতে তরুণ প্রজন্ম জেন-জি একটি ফ্যাক্টর। তাদের ভোটও নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। এই প্রজন্ম এবারের ভোটে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। যেখানে শুধু তাদের ভোটই নয়; তারা পরিবারের সদস্যদেরও ভোটদানে প্রভাবিত করতে পারবেন। এমন বাস্তবতায় তরুণ এই প্রজন্মের সঙ্গে ন্যূনতম সম্পর্ক নেই এমন ব্যক্তিদের ভোটদানে তাদের আগ্রহ কম থাকবে বলে তারা যুক্তি দিচ্ছেন। তাই বাস্তবতা অনুধাবন করে অপেক্ষাকৃত তারুণ্যকে প্রাধান্য দিয়ে বিএনপির মনোনয়ন চূড়ান্ত করার দাবি তুলছে ওইসব আসনের মনোনয়নবঞ্চিতরা।

কয়েকটি আসনে বয়স্ক প্রার্থী পরিবর্তনের জন্য স্থানীয় নেতারা দলীয় হাইকমান্ডের কাছে আবেদনও করেছেন। সূত্রমতে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন ৮৮ বছর বয়সি মুশফিকুর রহমান।

স্থানীয় নেতারা আবেদনে বলেন, এই আসনে দলের পরীক্ষিত নেতৃত্বকে উপেক্ষা করা হয়েছে। বিগত দিনে দলের কঠিন সময়ে, আন্দোলন-সংগ্রামে কসবা-আখাউড়ার রাজপথে যিনি নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন-সেই কবীর আহমেদ ভূঁইয়াকে বিবেচনায় না রেখে দীর্ঘদিন এলাকাবিচ্ছিন্ন একজন প্রবীণ প্রবাসীকে মনোনয়ন দেওয়ায় অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন।’

কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে ঘোষিত বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মেহেদী আহমেদ রুমীকে পরিবর্তন করে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শেখ সাদীকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ১৬ জন শীর্ষ নেতা।

আবেদনে বলা হয়, মেহেদী আহমেদ রুমীর মতো একজন বয়োবৃদ্ধ প্রার্থীর পক্ষে দলের একাংশকে নিয়ে প্রতিপক্ষকে ভোটের মাঠে মোকাবিলা করা কঠিন। এছাড়া রুমীর অসুস্থতা, কিছুটা ইমেজ সংকট, নেতৃত্বের এবং তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকা এবং এক-এগারো তার পরিবারের বিতর্কিত ভূমিকাসহ নানা কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়েছে। পক্ষান্তরে ওই আসনের বঞ্চিত প্রার্থী শেখ সাদীর সম্পর্কে আবেদনে বলা হয়েছে, তিনি অপেক্ষাকৃত তরুণ, ক্লিন ইমেজ এবং স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে।

খোকসা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আবু হেনা মোস্তাফা সালাম লুলু বলেন, বর্তমান ভোটার তালিকার প্রায় ৪০ শতাংশ তরুণ এবং নতুন ভোটার। শেখ সাদীর জনপ্রিয়তা এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ সবচেয়ে বেশি। এছাড়া নানা সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড করেছেন। এ কারণে স্থানীয়দের কাছে তিনি অনেক জনপ্রিয়। তিনি বলেন, ৩০ বছর ধরে রাজনীতি করছি। ১৭ বছর ধরে অনেকে হামলা-মামলা-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এ আসনে সাদিকেই মনোনয়ন দেওয়া হলে ধানের শীষের বিজয় সম্ভব হবে।

চট্টগ্রাম-১৩ আসনে সরওয়ার জামাল নিজাম প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন। তার বয়স ৮০ বছরেরও বেশি। তার অতীত কর্মকাণ্ডসহ নানা বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে লিখিত জানানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি শীর্ষ তিন নেতা স্বাক্ষরিত এক আবেদনে বলা হয়, দীর্ঘ সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে নির্যাতিত-নিপীড়িত কর্মী হিসাবে বিএনপি ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় বিগত সময়ে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় সাবেক সংসদ-সদস্য সরওয়ার জামাল নিজামের নাম দেখে অনেকেই হতবাক ও ব্যথিত হয়েছেন। মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে যারা দলের দুঃসময়ে আন্দোলন সংগ্রামে ছিল এ রকম কাউকে দলীয় প্রার্থী দেওয়ার জন্য আবেদন জানান তারা।

মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন মিজানুর রহমান সিনহা। তার বয়সও ৮০ বছরের বেশি। আবেদনে স্থানীয় নেতারা জানান, প্রার্থী করা হলেও তিনি ঠিকমতো গণসংযোগ করতে পারছেন না। যে কারণে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদকে দীর্ঘ বছর ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম ও বিপদ-আপদে তারা পাশে পেয়েছেন। স্থানীয়ভাবে সালামের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। তাই মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার জন্য তারা বিএনপির নীতিনির্ধারকদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার