বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৪৬ এএম
ক্ষমতায় গেলে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী-এখনো তা চূড়ান্ত করেনি বিএনপি। মাঠেঘাটে নির্বাচনী প্রচারে তারেক রহমানকে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী বলা হলেও সেটি দলের সিনিয়র নেতারা স্পষ্ট করছেন না।
প্রধানমন্ত্রী প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আগে নির্বাচন হোক।’
এর আগে এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, আগামীতে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন।
বিএনপির সিনিয়র নেতাদের এক অংশের মতে, নির্বাচনে জিতলে প্রথমে খালেদা জিয়াকেই প্রধানমন্ত্রী করা দরকার। তিনি কিছুদিন প্রধানমন্ত্রী থাকার পর তারেক রহমানের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। অবশ্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচনের পর পর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বড় ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন তারা।
তবে আরেক অংশের মতে, ক্ষমতায় গেলে প্রথম দিন থেকেই তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত। এতে তিনি শুরু থেকেই রাষ্ট্রের সকল অংশের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন। এতে বিএনপির জন্য সরকার পরিচালনা সহজ হবে। খালেদা জিয়া থাকবেন দলের চেয়ারপারসন।
প্রসঙ্গত, আগামী নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তিনটি এবং ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমান একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
বিএনপির ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, দলের সিনিয়র নেতাদের বড় একটি অংশ আগে খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করার পক্ষে। তারা মনে করেন, রাষ্ট্রের সব শক্তি সম্পর্কে খালেদা জিয়ার ভালো ধারণা আছে। সেসব শক্তিও তাকে ভালো বোঝেন। তাই ক্ষমতায় যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হলে সরকারের শুরুর পথ চলা অনেক মসৃণ হবে।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রের কোনো কোনো শক্তি এখনো তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে স্বস্তি বোধ করে না। তাই খালেদা জিয়া প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সেই অস্বস্তি দূর করতে পারবেন। এরপর তিনি তারেক রহমানের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। এতে পরে প্রধানমন্ত্রী হয়ে তারেক রহমান সহজে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
অন্যদিকে, দলের অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতারা ক্ষমতায় গেলে প্রথম দিন থেকেই তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। তাদের মতে, সংবিধান সংস্কার নিয়ে আলোচনায় একই ব্যক্তি ক্ষমতাসীন দলের প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না বলে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল প্রস্তাব করেছে। সরকারের জারি করা জুলাই সনদেও এই প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তাই, খালেদা জিয়াকে বিএনপির প্রধান পদে বহাল রেখে তারেক রহমান সহজে প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন।
এ ছাড়া জুলাই সনদের প্রস্তাব অনুযায়ী এক ব্যক্তি দশ বছরের বেশি সময় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। এই প্রস্তাবের আঙ্গিকেও খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রীত্বের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
অবশ্য জুলাই সনদের প্রস্তাবে অতীতে পালন করা দায়িত্বের মেয়াদ যোগ করা হয়নি। ফলে জুলাই সনদের এই প্রস্তাব সংসদে অনুমোদন হলে সেটি আগামী দিনের জন্য কার্যকর হবে।
তবে বিএনপির অন্য সূত্রগুলো বলছে, মূলত নিজেদের প্রভাব ও গুরুত্ব ধরে রাখতেই সিনিয়র নেতারা খালেদা জিয়াকে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী করতে চাইছেন। আর অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতারা সিনিয়র নেতাদের ওপর নিজেদের প্রভাব সৃষ্টি করতে চান। এ কারণে তারা প্রথম দিন থেকেই তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান।
বিএনপির অন্দর মহলে সিনিয়রদের চাইতে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদের সঙ্গেই তারেক রহমান বেশি স্বচ্ছন্দ্য বলে প্রচার রয়েছে।