‘নির্বাচন বানচালে হামলার ঘটনা ঘটতে পারে, বিচলিত হওয়ার কিছু নেই’
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫১ পিএম
বিএনপি ও গণতন্ত্র একটি অপরটির পরিপূরক বলে মন্তব্য করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফেরত এনেছিলেন। ১৫-১৬ বছর নেতৃত্ব দিয়ে স্বৈরাচারকে বিতাড়ন করেছেন গণতন্ত্রের জন্য। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এক কোটি লোককে চাকির দেওয়ার প্রতিশ্রুতিরও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
বুধবার সন্ধ্যায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল চট্টগ্রাম বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন খসরু।
এদিকে গণসংযোগ চলাকালে পাঁচলাইশের হামজারবাগে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর আসে। এ খবর আমির খসরুর কানে যাওয়ার পর সেমিনারে তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনায় বিচলিত কিংবা অস্থির হওয়ার কোনো কারণ নেই। সামনে নির্বাচন। এই নির্বাচন বানচালের জন্য, বাংলাদেশকে অস্থির করার জন্যও এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। মনোবল ঠিক রেখে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল, চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি আবু হোরায়রার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ বক্তা ছিলেন ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়জী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু, ইয়্যুথ ভয়েস অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার তারেক আকবর খন্দকার।
আমার প্রথম ভোট ও আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক এ সেমিনার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের জুলাই স্মৃতি বিপ্লব হলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন অতিথিদের।
সেমিনারে আমির খসরু বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে এক কোটি লোককে চাকরি দেওয়া হবে। এজন্য আমরা সমস্ত কার্যক্রম সমাপ্ত করেছি। এটা কোন রাজনৈতিক বক্তব্য নয়। কোন সেক্টরে কত বিনিয়োগ করা হবে, কোন সেক্টরে কতজনের চাকরির ব্যবস্থা করা হবে সেইসব হিসাব-নিকাশ করেই এ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
এ নির্বাচনে কেন বিএনপিকে ভোট দেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, সেটার প্রথম কারণ হচ্ছে ভোট তখনই দিতে পারে যখন দেশে গণতন্ত্র থাকে। হাসিনার সময় দেশে গণতন্ত্র ছিল না। বাংলাদেশে প্রথম বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। দেশে অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফেরত এনেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। ৭ বছর জেলে থেকেও তিনি আপস করেননি। তারেক রহমান সব কিছু হারিয়ে বিদেশে থেকে ১৫-১৬ বছর নেতৃত্ব দিয়ে স্বৈরাচারকে বিতাড়ন করেছেন গণতন্ত্রের জন্য। বিএনপি এবং গণতন্ত্র একে অপরের পরিপূরক।
খসরু বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের প্রথম অর্থনৈতিক মুক্তির পথ খুলে দিয়েছে। এর আগে অর্থনীতি ছিল আওয়ামী লীগ নেতাদের পকেটে, শেখ মুজিবের পকেটে।
তিনি বলেন, যত সংস্কার বাংলাদেশে হয়েছে- প্রেসিডেন্সিয়াল থেকে সংসদীয় গণতন্ত্র, কেয়ারটেকার সরকার সব করেছে বিএনপি। গণতন্ত্রের পথে যে বাধাগুলো ছিল তা সরিয়ে দিয়েছে বিএনপি। সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অর্থনীতির ভিত্তি মজবুত হয়েছে বিএনপির সময়। ইপিজেডগুলো বিএনপির সময় হয়েছে। সাধারণ মানুষ শিল্পায়নে ঢুকেছে। ব্যাংকের ঋণ গ্রহণ করতে পরেছে। বিএনপি যখন ক্ষমতা থেকে যায় তখন প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ০৬। এখনো সেই জায়গায় পৌঁছতে পারেনি বাংলাদেশ। ধারাবাহিকতা থাকলে এতদিনে ১০/১১ শতাংশে চলে যেত।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ২০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট করে ১০০ কোটি টাকা পকেটে ঢুকিয়েছে। তারা ব্যাংকিং সেক্টর শেয়ার বাজার ধ্বংস করেছে। বিএনপি টাকা ছাপিয়ে উন্নয়ন করবে না। অতিরিক্ত ঋণগ্রহণ করে কিছু করবে না। প্রত্যেকটি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চারটা জিনিস অনুসরণ করা হবে। ১৮ কোটি মানুষের কথা চিন্তা করেই সব কিছু করা হবে।