বিএনপির যেসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়বেন জামায়াত-এনসিপির শীর্ষ নেতারা
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৯ পিএম
সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন কমিশনকে তাগিদও দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সম্পূর্ণ করার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন। নির্বাচন নিয়ে সংশয় কেটে যাওয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও বইছে ভোটের হাওয়া।
এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩০০ আসনে দলের প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। এরপর গত সোমবার বিএনপি ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বিএনপি অথবা জামায়াতের সঙ্গে জোটের গুঞ্জন থাকলেও প্রায় ২০টির অধিক আসনে অনানুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে এনসিপি। এরপর মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।
নানা গুঞ্জন থাকা সত্ত্বেও দলগুলোর মধ্যে আসন নিয়ে যদি সমঝোতা না হয়, ঘোষিত প্রার্থী তালিকার অনুযায়ী এনসিপির শীর্ষ ও গুরত্বপূর্ণ নেতাদের লড়তে হবে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দীর সঙ্গে।
ভোটের লড়াইয়ে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান কিংবা সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারকেও মুখোমুখি হতে হবে মাঠে থাকা বিএনপির ডাকসাইটে নেতাদের বিরুদ্ধে।
তবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দিনাজপুর, বগুড়া ও ফেনীর ৩টি আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। তার প্রতি সম্মান রেখে এসব আসনে প্রার্থী না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এসব আসনগুলোতে থাকছে জামায়াতের প্রার্থী।
জামায়াত ও এনসিপির শীর্ষ নেতাদের আসনে পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী কারা?
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ঢাকা-১১ থেকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এই আসনে তাকে লড়তে হবে বিএনপির ডাকসাইটে নেতা এম এ কাইয়ুমের বিরুদ্ধে। এই আসনে তার আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামীর অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান।
পঞ্চগড়-১ সংসদীয় আসনে এনসিপির প্রার্থী দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। এই আসনে তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ নওশাদ জমির। তার বাবা সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার কয়েকবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। একই আসনে আছেন জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক ইকবাল হোসেন।
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর আসন কুমিল্লা-৪। সেখানে তার মুখোমুখি সাবেক চারবারের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী। একই আসনে তার আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের সাইফুল ইসলাম শহীদ।
অন্যদিকে রংপুর-৪ আসনে নির্বাচনি লড়াইয়ে অংশ নেবেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। সেই আসনে বিএনপি থেকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রংপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কাউনিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোহাম্মদ এমদাদুল হক ভরসা এবং জামায়াত থেকে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও রংপুর মহানগর জামায়াতের আমির এটিএম আজম খান।
এদিকে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা ঢাকা-৯ আসন থেকে লড়বেন বলে ঘোষণা এসেছে। এই আসনে এখনো কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়নি বিএনপি। তবে তাসনিম জারাকে লড়তে হবে এই আসনের স্থায়ী বাসিন্দা জামায়াতের কবির আহমদের বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হান্নান মাসউদ নোয়াখালী-৬ আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। আসনটিতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে থাকবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। আর জামায়াতের প্রার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শাহ মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।
এদিকে ঢাকা-১৫ আসনে হতে চলেছে দুই শফিকের লড়াই। জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের মুখোমুখি যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম খান মিল্টন। এই আসনে অবশ্য এখনো কোনো প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেনি এনসিপি।
খুলনা-৫ আসনে জামায়াতের প্রার্থী দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। দীর্ঘ ২৯ বছর পর এই আসন থেকে বিএনপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মোহাম্মদ আলী আসগর লবী। ১৯৯৬ সালের পর ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের শরীক জামায়াতে ইসলামীর জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল খুলনা–৫ আসনটি। এরপর থেকে বিএনপির কেউ এই আসনে প্রার্থী হননি। এই আসনেও এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি এনসিপি।