কুমিল্লা-৬ সদর আসনে বিএনপির মনোনয়ন কি সাক্কুর চমক?
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৩ পিএম
কুমিল্লা-৬ আদর্শ সদর-সদর দক্ষিণ সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। আসনটিতে মনোনয়ন লাভ করে চমক সৃষ্টি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী।
এর আগে মনির চৌধুরী ছাড়া এ আসনে অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে মনিরুল হক সাক্কু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার এমন সিদ্ধান্তের বিষয়টি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে অবহিত করেছেন। এখন আলোচনা চলছে কুমিল্লার গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে মনোনয়নের চমক কি সাক্কুর নাকি মনির চৌধুরীর?
এদিকে দীর্ঘ ১৭ বছর সংগঠনের হাল ধরে রেখে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে হতাশ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন এবং তার অনুসারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় আসন কুমিল্লা-৬ সদর সংসদীয় আসন। আসনটিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরীর মনোনয়ন নগরজুড়ে চমক সৃষ্টি হয়েছে। তিনি কুমিল্লা-১০ আসনের ভোটার এবং মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। সম্প্রতি আসন পুনর্বিন্যাসের ফলে তিনি কুমিল্লা-৬ আসনে যুক্ত হন। যদিও এখানে মনির চৌধুরীর পৃথক বলয় এবং জনপ্রিয়তা রয়েছে।
এ আসনে দীর্ঘ ১৭ বছর যাবত মনোনয়ন প্রত্যাশায় সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন। আবার ইয়াছিনের সঙ্গে চরম বিরোধ রয়েছে সাবেক কুসিক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর। তাই ইয়াছিন মনোনয়ন পেলে সাক্কু স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করার ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে রেখেছিলেন।
এরই মাঝে সাক্কু নগরীতে বেশ কিছু প্রোগ্রাম এবং গণসংযোগ করেছেন। এসব গণসংযোগে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন মনিরুল হক চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হলে তিনি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করবেন না। অন্য কেউ বিএনপির মনোনয়ন পেলে তিনি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনে লড়বেন।
এরই মাঝে গত ২৬ অক্টোবর বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মনিরুল সাক্কু। এ সময় মনিরুল হক চৌধুরীকে মনোনয়ন দিলে তিনি নির্বাচন থেকে বিরত থাকবেন বলে মহাসচিবের কাছে প্রতিশ্রুতি দেন।
স্থানীয়রা জানান, আসনটিতে দীর্ঘদিন সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার ফলে হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিনের একটি বলয় রয়েছে। মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় সোমবার রাতে তার অনুসারীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রতিবাদ সভা করেন। প্রার্থিতা ঘোষণার পর থেকেই ইয়াছিন সমর্থকদের মাঝে চরম ক্ষোভ এবং হতাশা বিরাজ করছে। এদিকে প্রার্থী ঘোষণার পর মনিরুল হক চৌধুরীর মনোনয়নে মনিরুল হক সাক্কুর অনুসারীরা নগরীতে বিজয় মিছিল করেছেন।
স্থানীয়দের প্রশ্ন তবে কি বিএনপি ঐক্যবদ্ধ হবে? নাকি ক্ষোভ এবং হতাশা থেকে দ্বন্দ্ব কোন্দল আরও বাড়বে?
কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, দলের কাছে আমি ঋণী হয়ে গেলাম। আগামী নির্বাচনে দলকে এ আসন উপহার দিয়ে আমি আমার ঋণ পরিশোধ করব।
তিনি বলেন, মনোনয়ন বঞ্চিত হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিনের কাছে আমি যাব এবং তার প্রত্যেকটা অনুসারীর কাছে গিয়ে আমরা হাতে হাত মিলিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিএনপির বিজয় নিশ্চিত করব। আমি কোনোভাবেই এখানে কোন্দল রাখতে চাই না।
সাবেক কুসিক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, বিএনপির হাইকমান্ড এবার সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মনিরুল হক চৌধুরী জনপ্রিয় এবং যোগ্য প্রার্থী। তাকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে আমরা একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করব। এখানে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র বিএনপির বিজয় ঠেকাতে পারবে না।
মনোনয়ন বঞ্চিত হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন বলেন, আমি গত ১৭ বছর দলের হাল ধরে রেখেছি। হাজার হাজার নেতাকর্মীর মামলা হামলা মোকাবেলা করেছি। তৃণমূল থেকে দলকে সংগঠিত করেছি। আমার ত্যাগ সম্পর্কে সবাই অবগত। আমি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাব না।