বিএনপির ৩০০ আসনে মনোনয়ন তালিকা চূড়ান্ত
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৭ এএম
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির পক্ষ থেকে ৩০০ আসনের মনোনয়ন তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি জানিয়েছেন, দলের ভেতরে মতবিরোধ থাকলেও নেতৃত্বের সিদ্ধান্তকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে এবং মনোনয়ন–সংক্রান্ত যেকোনো বিরোধ ভুলে ঐক্যের মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে।
রবিবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে আয়োজিত বিশেষ রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
মনোনয়ন চূড়ান্তে শেষ পর্যায় : তারেক রহমান বলেন, “৩০০ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা প্রায় চূড়ান্ত। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তাকে সবাই মেনে নিতে হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, মাঠপর্যায়ে যাঁরা গণসংযোগ করছেন, তাঁরা সকলেই একই লক্ষ্যে কাজ করছেন গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা।
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে সতর্কবার্তা : তারেক রহমান বলেন, “দলের ভেতরে বিভক্তি বা রেষারেষি তৈরি হলে প্রতিপক্ষ সে সুযোগ কাজে লাগাবে। তাই ব্যক্তিগত উচ্চাশাকে দলীয় স্বার্থের নিচে রাখতে হবে।”
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “গোপনে স্বৈরাচারী শক্তি সক্রিয় রয়েছে। আপনি যদি ভেতরে ভেতরে বিভক্ত হন তবে তারা সুযোগ নেবে।”
নেতৃত্বের সম্মান রক্ষার আহ্বান : তারেক রহমান দলের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি সম্মান রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “স্বাধীনতার ঘোষক ও মাদার অব ডেমোক্রেসির প্রতি অসম্মানজনক আচরণ কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এমন কিছু করবেন না যাতে সাধারণ সমর্থক বিব্রত হয়।”
জনগণের পাশে থাকার নির্দেশ : তিনি কর্মীদের জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, “ভোট দিলে ধানের শীষে, দেশ গড়বো মিলে মিশে। এই বার্তাটি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিন।” তার বক্তব্যে পরিষ্কার ছিল নির্বাচনে বিজয়ের জন্য মাঠপর্যায়ে জনসংযোগ ও সংগঠনের শক্তি বাড়ানোই মূল কৌশল।
নির্বাচন ঘিরে শঙ্কা : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সময়মতো অনুষ্ঠিত হবে কি না, এ প্রশ্নও তুলে ধরেন তিনি। তারেক রহমান বলেন, “বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে নির্বাচনের সময়সূচি ঠিক থাকবে কি না। বিভিন্ন অপশক্তি যেন সুযোগ নিতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।” তিনি বলেন, দেশে বিভ্রান্তিকর তথ্য, সংঘাত ও অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে ভোটে অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত করার জন্য।
কৌশলী এগোনোর তাগিদ : “কৌশল আর অপকৌশল—এই দুইয়ের পার্থক্য বুঝতে না পারলে ভুল সিদ্ধান্ত দেশের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। আমাদের বিবেচনা করে এগোতে হবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ : রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি এবার বয়স, জনপ্রিয়তা, মাঠপর্যায়ের গ্রহণযোগ্যতা, সামাজিক ইমেজ ও নির্বাচন পূর্ব কৌশল বিবেচনায় মনোনয়ন দিচ্ছে। দলটি চাইছে কর্পোরেট সংশ্লিষ্টতা ও নেতিবাচক ইমেজযুক্ত প্রার্থীর সংখ্যা কমিয়ে “পরিষ্কার ইমেজের রাজনৈতিক দল” হিসেবে আবির্ভূত হতে।
তাদের ধারণা, মনোনয়ন বণ্টনে স্বচ্ছতা আনতে না পারলে দলীয় ভাঙন বাড়তে পারে, তাই বিএনপি এবার শুরু থেকেই ঐক্য ও শৃঙ্খলায় জোর দিচ্ছে।