Logo
Logo
×

রাজনীতি

এনসিপির নাহিদে কাটা পড়বেন বিএনপির কাইয়ুম?

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৫২ এএম

এনসিপির নাহিদে কাটা পড়বেন বিএনপির কাইয়ুম?

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ ছেড়ে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়কের দায়িত্ব নিয়েছেন নাহিদ ইসলাম। নতুন দলে যোগ দিলেও গত নয় মাসে কখনো নিজে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা বলেননি তিনি। রোববার প্রথমবারের মতো জানালেন, ঢাকায় তিনি নির্বাচন করবেন। তবে কোন আসন থেকে, সেটি বলেননি।

নাহিদ ইসলামের পৈতৃক বাড়ি রাজধানী ঢাকার বাড্ডা থানার ফকিরকান্দি। তবে বর্তমানে তাদের স্থায়ী নিবাস দক্ষিণ বনশ্রী। তার পৈতৃক এবং বর্তমান ঠিকানা দুটিই জাতীয় সংসদের ঢাকা-১১ আসনের এলাকা। ফলে এটি প্রায় নিশ্চিত, ঢাকা-১১ আসন থেকেই নির্বাচন করবেন এনসিপির শীর্ষ এই নেতা।

ঢাকা-১১ আসনে বিএনপির হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রার্থী এম এ কাইয়ুম। তিনি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্ষুদ্রঋণবিষয়ক সম্পাদক। এক সময় ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন। আওয়ামী লীগ আমলে মামলা-মোকদ্দমায় জর্জরিত হয়ে দেশ ছেড়ে মালয়েশিয়া চলে গিয়েছিলেন।

২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে ঢাকা-১১ আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছিলেন এম এ কাইয়ুমের স্ত্রী শামীম বেগম। আগামী নির্বাচনে এই আসনে এই দম্পতি ছাড়াও বিএনপির মনোনয়নপ্রত‍্যাশী এজিএম শামসুল ইসলাম। তবে বিএনপি হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ ও প্রভাব-প্রতিপত্তির দিক দিয়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন এম এ কাইয়ুম। দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা প্রায় নিশ্চিত, তিনিই ধানের শীষের মনোনয়ন পাচ্ছেন। এরই মধ্যে নির্বাচনী এলাকা ছেয়ে গেছে এম এ কাইয়ুমের পোস্টারে।

বিএনপি এবং এনসিপি আলাদাভাবে নির্বাচন করলে এম এ কাইয়ুমের মতো প্রবল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নির্বাচন করবেন নাহিদ ইসলাম। এলাকাবাসীর মতে, এটি হবে অসম প্রতিযোগিতা।

এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান। তবে বৃহত্তর ঢাকার অন্যান্য এলাকার মতোই রাজধানীতে জামাতের খুব একটা ভোট নেই। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে সারা দেশে এককভাবে নির্বাচন করেছিল জামায়াতে ইসলামী। সেবার এই নির্বাচনী এলাকায় পড়েছিল দুটি আসন–ঢাকা-৫ ও ঢাকা-৬। এই দুই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রাপ্ত ভোট ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ ও তিন শতাংশ। ফলে আগামী নির্বাচনে এনসিপি যদি জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করে, আর জোট থেকে যদি নাহিদ ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়া হয়, তবুও ভোটযুদ্ধে তার জয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ।

বাকি রইল বিএনপি-এনসিপি জোটের সম্ভাবনা। এনসিপি কোনো দলের সঙ্গে নির্বাচনী জোট করবে কি না তা স্পষ্ট করেনি। সংসদের ৩০০ আসনেই প্রার্থী মনোনয়নের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। আবার যেকোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার পথও খোলা রেখেছে। রাজনৈতিক মহলে আলোচনা আছে, বেশ কিছুদিন ধরেই পর্দার আড়ালে বিএনপির সঙ্গে দেন দরবার করছে এনসিপি। শুরুতে বিএনপির কাছে তারা দশটিরও বেশি আসন দাবি করেছিল। আর বিএনপি দিতে চেয়েছিল দুটি আসন। রাজনৈতিক মহলের খবর, অনেক দেনদরবারের পর ছয়টি আসনে এনসিপিকে ছাড় দেওয়ার সমঝোতা হয়েছে।

এনসিপির ছয়জন নেতাকে ছাড় দেয়া হলে তাদের মধ্যে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামও থাকবেন। বিএনপি-এনসিপির এই সমঝোতা চূড়ান্ত হলে ঢাকা-১১ আসনটি নাহিদ ইসলামকে ছেড়ে দেবে বিএনপি। আর বাদ পড়বেন বিএনপির হেভিওয়েট নেতা এম এ কাইয়ুম। সেক্ষেত্রে তাকে পাশের ঢাকা-১২ আসনে সরিয়ে নিতে পারে বিএনপি। আবার সেই আসনটিও বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে যাওয়া আরেক দল গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকিকে ছেড়ে দেয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। জোটসঙ্গীদের আসন ছাড়তে গিয়ে শেষ পর্য়ন্ত কপাল পুড়তে পারে এম এ কাইয়ুমের।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার