Logo
Logo
×

রাজনীতি

বিএনপির খসড়া মনোনয়ন তালিকায় ১৫ নারী!

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৩০ পিএম

বিএনপির খসড়া মনোনয়ন তালিকায় ১৫ নারী!

জুলাই জাতীয় সনদ অনুযায়ী আগামী সংসদ নির্বাচনে পাঁচ শতাংশ নারীকে সরাসরি দলীয় মনোনয়ন দেয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে বিএনপি। দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের খসড়া তালিকায় আছেন ১৫ জন নেত্রীর নাম। কারা সেই ১৫ জন নেত্রী, সে বিষয়ে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে ধারণা পাওয়া গেছে। 

আগামী সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিএনপির প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত। সম্প্রতি দশ সাংগঠনিক বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জুলাই সনদের বিধান অনুযায়ী সংরক্ষিত ৫০ নারী আসনের বাইরে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে হবে। সেই মোতাবেক ১৫ জন নারী নেত্রীকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তাদের সবাই নিজ নির্বাচনী এলাকায় পরিচিত, এগিয়ে আছেন দলীয় জরিপেও।

খসড়া তালিকায় আছেন মানিকগঞ্জ‌-৩ আসনে আফরোজা খান রিতা। তিনি প্রয়াত বিএনপি নেতা, সাবেক মন্ত্রী হারুনার রশিদ খান মুন্নুর মেয়ে আফরোজা খান রিতা। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। মানিকগঞ্জ- ৩ আসনে তার মনোনয়ন অনেকটা চূড়ান্ত।

ঢাকা-১৪ আসনে সবুজ সংকেত পেয়েছেন ‘মায়ের ডাক’ নামক সংগঠনের সমন্বয়কারী সানজিদা তুলি। তার ভাই, বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমন গুম হওয়ার পর তিনি এই সংগঠন গড়ে তোলেন। গুম নিয়ে সোচ্চার ভূমিকায় দেশ-বিদেশে তিনি বেশ প্রশংসিত হন তিনি।

সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রেহেনা আক্তার রানু মনোনয়ন পেতে পারেন। ফেনী-২ আসনের মনোনয়ন জরিপে তিনি বেশ এগিয়ে আছেন। আর, নাটর-১ আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত ফজলুর রহমান পটলের মেয়ে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ফারজানা শারমিন পুতুল। 

নীলফামারি-৪ আসনে আছেন বেবী নাজনীন। আওয়ামী লীগ শাসনামলে সরকারি বাধায় সংগীত থেকে অনেকটা দূরে সরে যান। স্বাচ্ছন্দে কাজ করতে না পারার বেদনা নিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকায় নীলফামারি-৪ আসনের মনোনয়ন আলোচনায় তিনিও আছেন।

জিয়াউর রহমানের গড়া দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে রিটা রহমান রংপুর- ৩ আসনে মনোনয়ন পেতে পারে। অন্যদিকে সংগীতের পাশাপাশি বিএনপির রাজনীতিতে বেশ সক্রিয় কনক চাঁপা। সিরাজগঞ্জ-১ আসনে দ্বিতীয়বার বিএনপির পক্ষে নির্বাচনে লড়াইয়ের টিকিট পেতে পারেন তিনি।

শেরপুর-১ সদর আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হতে পারেন জেলা বিএনপি নেতা হযরত আলীর মেয়ে চিকিৎসক সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা। ২০১৮ সালেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন। আর, ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির সহশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক হেলেন জেরিন খান। মাদারিপুর-২ আসনের সবুজ সংকেত পেয়ে মাঠে কাজ করছেন এই নারী নেত্রী।

বর্ষীয়ান রাজনীতিক, বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুর রহমানের মেয়ে শামা ওবায়েদ। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এবারও ফরিদপুর-২ আসনে লড়বেন। বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত এই ফরিদপুর-৩ আসন পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে এবার মাঠে নামবেন চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে নায়াবা ইউসুফ। বাবার মৃত্যুর পর তার মেয়েকে যোগ্য উত্তরসূরি মনে করছে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।

চুনারুঘাট-মাধবপুর নিয়ে হবিগঞ্জ-৪ আসনে সাবেক নারী সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তার মনোনয়ন পাওয়ার আলোচনায় আছেন। অন্যদিকে, বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী ‘গুমের’ পর তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা রাজনীতিতে সক্রিয় হন। স্বামীর জনপ্রিয়তা আর নিজের আন্তরিকতা দিয়ে অল্পদিনেই স্থানীয় বিএনপিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন। আসছে নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে তার ওপরেই আস্থা রাখতে পারে বিএনপি। 

স্বামী, সাবেক সংসদ সদস্য জুলফিকার আলী ভুট্টোর মৃত্যুর পর ঝালকাঠি-২ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে ২০০০ সালে রাজনীতিতে আসেন ইলেন ভুট্টো। এরপর ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি থেকে প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আমির হোসেন আমুকে পরাজিত করেন। এবারের নির্বাচনেও ঝালকাঠি ২ আসনে ধানের শীষের ঝান্ডা তার হাতেই যাবার কথা শোনা যাচ্ছে। 

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সাবিরা নাজমুল মুন্নী। তার প্রয়াত স্বামী জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ নাজমুল ইসলাম ২০১১ সালে অপহরণের পর খুন হন। স্বামীর মৃত্যুর পর গৃহিণী থেকে রাজনীতিতে আসেন মুন্নী। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। হয়রানি ও মিথ্যা মামলার শিকারও হয়েছেন। যশোর-২ আসনে তার মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। 

একই পরিবার থেকে একাধিক ব্যক্তি মনোনয়ন পাবেন না, এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির। তবুও মনোনয়ন পাওয়ার আলোচনায় আছেন মহিলা দল সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাবেক সাংসদ রুমানা মাহমুদ, হাসিনা আহমেদ। এর বাইরে রুমিন ফারহানা, মাসউদা আফরোজ হক শুচি, নেওয়াজ হালিমা আরলিসহ আরো কয়েকজনের নামও শোনা যাচ্ছে।  

জোট শরিকদের জন্য দলটি ৫০ আসন ছাড়তে পারে বিএনপি। সেক্ষেত্রে সরাসরি ভোটে নারী মনোনয়ন ১৫’র চেয়ে কমে আসতে পারে। নারী নেত্রীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ বাড়ানোর এই উদ্যোগ সফল হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার