বিএনপির ৬-৭ জন করে মনোনয়নপ্রত্যাশী, টিকিট পাচ্ছেন কারা?

জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৫৩ পিএম
এক সময় বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত ছিল রাজশাহী। ২০০১ সালের নির্বাচনে রাজশাহীর আসনগুলোতে চমক দেখিয়েছিল ধানের শীষ। ত্রয়োদশ নির্বাচন সামনে রেখে প্রস্তুত মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। তবে এখনও প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় দলে বিভাজন বাড়ছে। দ্বন্দ্ব সংঘাতে জর্জরিত হয়ে পড়ছে সংগঠন। এই সুযোগে জামায়াতের প্রার্থীরা মাঠঘাট চষে বেড়াচ্ছে।
এদিকে রাজশাহীর প্রতিটি আসনেই বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ৬ থেকে ৭ জন করে। দু-একটিতে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি। তারা নির্বাচনি এলাকায় নিজ নিজ বলয় তৈরি করে গণসংযোগ চালাচ্ছেন। বিএনপির মাঠের নেতাকর্মীরা দলে দলে ভাগ হয়ে একেক প্রার্থীর পেছনে পেছনে ঘুরছেন। ফলে তৃণমূলে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে বিভক্তি-বিভাজন বাড়ছে। কোথাও কোথাও নিজেরাই জড়াচ্ছেন সংঘাত-সংঘর্ষে। ইতোমধ্যে রাজশাহী-১ আসনের তানোর উপজেলায় বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন দুই নেতা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে পরপর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপির সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হক। তার ভাই মেজর জেনারেল (অব.) শরিফ উদ্দিন নিয়মিত গণসংযোগ করছেন এলাকায়। মনোনয়ন প্রত্যাশায় অন্যদের মধ্যে শিল্পপতি সুলতানুল ইসলাম তারেক, ইঞ্জিনিয়ার কেএম জুয়েল, সুপ্রিমকোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন, সাজেদুর রহমান মার্কনি, অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বিপ্লব এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন শাহীন এলাকায় গণসংযোগ করছেন। নেতাকর্মীরা জানান, ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে, মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যাও বাড়ছে। এতে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
রাজশাহী-২ (মহানগর) আসনে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ধারায় বিভক্ত। কয়েক মাস ধরে মহানগরে বিএনপির কমিটি নেই। নগরীর সড়কদ্বীপে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ব্যানার ফেস্টুন ফ্লেক্স চোখে পড়ে।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, এই আসনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর অনুসারীরা তাকে প্রার্থী করতে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশা ও সাবেক সদস্য সচিব মামুনুর রশিদও মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে নগরীতে গণসংযোগ করছেন। মিজানুর রহমান মিনু বলেন, বিএনপিতে অনেক যোগ্য নেতৃত্ব আছেন। অনেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন। দল নিশ্চয়ই যোগ্য ব্যক্তিকেই মনোনয়ন দেবে।
অন্যদিকে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনটি নগরীর উপকণ্ঠের দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত। এই আসনেও বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী গণসংযোগ করছেন। এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অন্যতম রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন। মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্যরা হলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য রায়হানুল হক, মোহনপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুস সামাদ, সাবেক ছাত্রনেতা ইকবাল হোসেন ও বিএনপির সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত কবীর হোসেনের ছেলে নাসির হোসেন অস্থির।
রাজশাহী-৫ (দুর্গাপুর-পুঠিয়া) আসনেও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর ছড়াছড়ি। এই আসনে বিভিন্ন মনোনয়ন প্রত্যাশীর অনুসারীরা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে মাঝে মাঝে সংঘাতের ঘটনা ঘটছে। এই আসনে মাঠে নেমেছেন বিএনপির হাফ ডজনের বেশি মনোনয়ন প্রত্যাশী। তারা হলেন পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক মাহমুদা হাবিবা, জেলা বিএনপির সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মন্ডল, শিল্পপতি আব্দুস সাত্তার, পুঠিয়া বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ইসফা খায়রুল হক এবং এ আসনের সাবেক প্রয়াত সংসদ সদস্য নাদিম মোস্তফার ছেলে জুলকার নাঈম মোস্তফা, শ্রমিক দলনেতা রোকনুজ্জামান আলম ও গোলাম মোস্তফা। এদিকে রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনেও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকা বেশ দীর্ঘ। এই আসনের অন্যতম প্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ ২০১৮ সালেও দলের মনোনয়নে নির্বাচন করেছিলেন। এবারও তিনি এই আসনের অন্যতম ফেবারিট প্রার্থী।