মিত্রদের ছেড়ে দেওয়া বিএনপির ২৮ আসন পাচ্ছেন কারা?
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৩ এএম
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মিত্রদের জন্য ছেড়ে দেওয়া ২৮টি আসন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। নির্বাচন সামনে রেখে মিত্র দলগুলোর অন্তত ১০ জন শীর্ষ নেতা বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে অনিবন্ধিত দলের নেতারাই এগিয়ে রয়েছেন। তবে জোটের নিবন্ধিত দলগুলোর কেউ কেউ নিজ প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নিতে চান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনের ঠিক আগে নিজ দল ত্যাগ করলে ভোটারদের কাছে প্রার্থীদের ব্যক্তিগত আস্থা ক্ষুণ্ণ হতে পারে।
বিএনপি ইতিমধ্যে দুই ধাপে ২৭২ আসনে তাদের সম্ভাব্য একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বর্তমানে ২৮টি আসন ফাঁকা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এসব আসনে ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের শরিকদের ছাড় দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ৪টি আসন ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জোটগতভাবে নির্বাচন করলেও আইনি বিধান অনুযায়ী নিজ নিজ দলের প্রতীকে লড়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলে আসন সমঝোতার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করছে বিএনপি। এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কয়েকটি অনিবন্ধিত দল নিজেদের সংগঠন বিলুপ্ত করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিয়েছে।
সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ‘অনিবন্ধিত দল হিসেবে আমরা মনে করেছি, আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষ একটি জনপ্রিয় প্রতীক। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে বিজয়ী করতে আমি আমার দলকে বিলুপ্ত করে গতকাল বিএনপিতে যোগ দিয়েছি এবং এই প্রতীকেই নির্বাচন করতে চাই।’
মিত্র দলগুলোর অন্তত ১০ জন শীর্ষ নেতা একইভাবে বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তবে ব্যতিক্রমী অবস্থানে রয়েছে নিবন্ধিত দলগুলো। যেমন—বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রথমে ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। সেখানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস প্রার্থী হওয়ায় বর্তমানে তাঁর জন্য ঢাকা-১২ আসন নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা চলছে। তবে সাইফুল হক নিজ দলের ‘কোদাল’ প্রতীক নিয়েই জোটের শরিক হিসেবে নির্বাচন করতে আগ্রহী।
সাইফুল হক বলেন, ‘নির্বাচনের আগে দল বদল করা মানুষের কাছে ইতিবাচক বার্তা দেয় না। মনে হয় যেন এমপি বা মন্ত্রী হওয়াটাই রাজনীতির মূল লক্ষ্য। আমরা যেহেতু একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, তাই আমরা আমাদের নিজস্ব প্রতীকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।’
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভোটের আগে দল ত্যাগের এই সংস্কৃতি সাধারণ ভোটাররা সহজভাবে নেন না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘শেষ মুহূর্তে একটি আসনের জন্য নিজের দল ভেঙে বিএনপিতে যোগ দেওয়া প্রমাণ করে ওই দলের কোনো সুনির্দিষ্ট আদর্শ ছিল না। এই চর্চাকে প্রশ্রয় দেওয়া ইতিবাচক নয়।’
নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৯ ডিসেম্বর।