Logo
Logo
×

রাজনীতি

বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ সংবিধান পরিপন্থি ও বৈষম্যমূলক: রাশেদ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম

বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ সংবিধান পরিপন্থি ও বৈষম্যমূলক: রাশেদ

বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ সংবিধান পরিপন্থি ও বৈষম্যমূলক বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ঘোষিত বাজেট প্রতিক্রিয়া সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।রাশেদ খান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে ঘোষিত আসন্ন ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে আগের আমলের বাজেটের ছাপ পরিলক্ষিত হয়েছে। বরাবরের মতো এবারও ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি বাজেট। যা ব্যাংক ঋণ ও বৈদেশিক অনুদান থেকে পূরণ করা হবে। অর্থাৎ এবারের বাজেটেও বিদেশ নির্ভরতা কমানো হয়নি। তিনি বলেন, বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ সংবিধান পরিপন্থি ও বৈষম্যমূলক।

এছাড়া এপার্টমেন্ট, ফ্লাট কেনাকাটায় ও ভবন নির্মাণে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার এমন নীতি বিবর্জিত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না যে, নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিলে টাকার উৎস সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে।রাশেদ আরও জানান, বাজেটে জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ ইতিবাচক দিক। তবে ১০ মাসেও যোদ্ধাদের সুচিকিৎসা, পুর্নবাসন, ক্ষতিপূরণ না হওয়ায় সন্দেহ সংশয় থেকে যায় যে, এই বরাদ্দ  সঠিকভাবে ব্যবহৃত হবে কি না!‘

জুলাই যোদ্ধাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫২৫০০০ টাকা অত্যন্ত ইতিহাস দিক।’গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, চলতি অর্থবছরে এনবিআর থেকে ৪ লাখ ৯৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য থাকলেও তা পূরণ হয়নি। আসন্ন বাজেটেও সেই লক্ষ্য মাত্রা পূরণে নেই কোন নতুন প্রস্তাবনা। রাশেদ বলেন, এবারের বাজেটে সুদ ব্যায়ের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে  ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি অর্থ বছরের তুলনায় ৫০০ কোটি টাকা বেশি। অর্থাৎ দেশি ও বিদেশি ঋণের বোঝা বাড়ার সম্ভাবনা থেকেই সুদ ব্যায়ে বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, ২৯৪১০ কোটি টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আসন্ন বাজেটের জন্য আবারও নতুন করে টাকা ছাপানোর ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে। এতে ভোগান্তিতে পড়বে সাধারণ মানুষ। গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার কর্মসংস্থান নিয়ে বিশদ পরিকল্পনা প্রকাশ করবে বলে সবার ধারণা ছিল। কারণ চাকরিতে কোটা সংস্কার বা বৈষম্য দূরীকরণের আন্দোলন থেকেই গণঅভ্যুত্থান রচিত হয়। কিন্তু সেই হাজারো বেকার, চাকরি প্রত্যাশী ও ২৭ লাখ শিক্ষিত বেকারের জন্য আলাদা কোন ঘোষণা নাই।

মানুষের আয় ও ব্যায়ের তারতম্য কমানো, বেকারত্ব- দারিদ্র্য দূরীকরণ নিয়ে বাজেটে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের সন্তুষ্টি করতে তাদের বেতন-ভাতা বাড়নোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এতে ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্য ও মূল্যস্ফীতি বাড়বে। সমাজ ও রাষ্ট্রে সাম্য প্রতিষ্ঠায় সরকারের চিন্তা এই বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি বলেও জানান রাশেদ। ‘শিক্ষা ও চিকিৎসা খাত নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চিন্তা আওয়ামী সরকারের চিন্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

এই সরকার কিভাবে এই দুইখাতে সংস্কার বাস্তবায়ন করবে সেটিও বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি।’‘বাজেটে শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর কথা। স্বাস্থ্য খাতে সংস্কার কমিশন বাজেটের ১৫ শতাংশ প্রস্তাব করেছে। কিন্তু ২৫-২৬ অর্থ বছরে নামে মাত্র বাড়ানো হয়েছে ( ৪.১৯ শতাংশ থেকে ৫.৩ শতাংশ)। শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য সাড়ে ৯৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা মোট জাতীয় বাজেটের ১২ দশমিক এক শতাংশের মতো। কিন্তু শিক্ষাবিদদের মতে এই খাতে ২০ শতাংশ বরাদ্দ রাখা জরুরি।’নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে ১০০ কোটি টাকার তহবিল নিসন্দেহে পজিটিভ দিক। তবে ব্যক্তি পর্যায়ে বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি বলেও জানান তিনি।‘সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ভাতা ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কিন্তু মোট ভাতা বর্তমানে যা আছে, তা খুবই অপর্যাপ্ত। বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে মোট ভাতা বাড়ানো প্রয়োজন।

পাচার হওয়া অর্থ ও সম্পদের উপর কর আরোপ পজিটিভ দিক। কিন্তু পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার কোন পরিকল্পনা বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি।’বাজেটে কিছু নিত্যপণ্যের দাম কমানোকে ইতিবাচক। তবে মূল্যস্ফীতির কারণে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করেন রাশেদ খান।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, আব্দুজ জাহের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন প্রমূখ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার