বিএনপির চূড়ান্ত মনোনীতরা চিঠি পাচ্ছেন দুই-এক দিনের মধ্যেই
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৬ পিএম
ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থী মনোনয়ন ও অন্যান্য নির্বাচনী কার্যক্রমে ব্যস্ত সময় পার করছে বিএনপি। ইতোমধ্যে দলটি ৩শ’ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৭৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এবার সম্ভাব্য প্রার্থীদের চূড়ান্ত মনোনয়ন দিতে দুই-এক দিনের মধ্যে চিঠি দেওয়া শুরু করবে বিএনপি। দলীয় সূত্র জানায়, প্রতিটি আসনে এবার একজন প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দের জন্য চিঠি দেওয়া হবে। চিঠিতে স্বাক্ষর করবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী কর্মকর্তার কার্যালয়ে দলীয় এ চিঠি জমা দিয়ে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক বরাদ্দ নিবেন। জানা গেছে, বিএনপি ঘোষিত অল্প কয়েকটি আসনে প্রার্থী বদল হতে পারে। সম্প্রতি গুলশানে ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত কর্মশালায় ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকার কয়েকজনকে ডাকা হয়নি।
প্রথম দফায় গত ৩ নভেম্বর ২৩৬ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর বেশ কয়েকটি আসনে মনোনয়ন বঞ্চিতরা বিক্ষোভ শুরু করে। জানা গেছে, এসব আসনগুলোতে নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান দিয়ে পুনরায় জরিপ চালানো হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় গত ৪ ডিসেম্বর ৩৬ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। দলের মনোনয়নের তালিকায় সবশেষ যোগ হয়েছেন লক্ষীপুর-৪ আসনের এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান।
এদিকে ২০ ডিসেম্বর শনিবারও দিনব্যাপী রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা ও ফরিদপুর বিভাগের ৯০ জন প্রার্থীর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সভা সূত্রে জানা গেছে, ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক কার্ড, ক্রীড়া, খতিব-ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সামাজিক মর্যাদা ও জীবনমান উন্নয়ন, নদী-খাল-বিল ও পরিবেশ রক্ষা, স্বাস্থ্য খাত, শিক্ষা ও দক্ষ জনশক্তি এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার বিষয়ে পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। আগামী দিনে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি এই আট দফা কিভাবে বাস্তবায়ন করবে তা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, মতবিনিময় সভা হলেও মূলত এটি কর্মশালায় পরিণত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিভাবে প্রচার চালাতে হবে তার নানা দিক তুলে ধরে পরামর্শ দেওয়া হয়। নির্বাচনী এলাকার কেন্দ্র ও আসনভিত্তিক ভোটার লিস্ট প্রার্থীরা কিভাবে ভোটারদের কাছে পাঠাবেন বা প্রচার চালাবেন সেসব বিষয়ে ধারণা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ভোটারদের কাছে ভালোভাবে তুলে ধরার পরামর্শ দেওয়া হয়। পাশাপাশি মনোনয়ন ফরম পূরণ, নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলা এবং সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দলীয় প্রার্থীদের কাছ থেকে মনোনয়নপত্রের টাকাও জমা নিয়েছে বিএনপি।
বৈঠকে তারেক রহমান বলেন, নির্বাচন নিয়ে এখনও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নির্বাচনকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে কেউ কেউ। বিভিন্ন মহল থেকে শুরু হওয়া এই ষড়যন্ত্র একমাত্র বিএনপিই রুখতে পারে। আপনারা নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে ঘরে ঘরে প্রচার-প্রচারণা চালান। মানুষের পাশে দাঁড়ান। ৮ দফা ও ৩১ দফা জনগণের মধ্যে বিশদ আকারে তুলে ধরুন। এবার ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
সভায় উপস্থিত লক্ষ্মীপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, বৈঠকটা আসলে ট্রেনিংয়ের মতো। নির্বাচনী প্রচারের আট দফার ওপর বিশেষজ্ঞরা কথা বলেছেন। আমরা সোশ্যাল মিডিয়া কিভাবে ব্যবহার করব, কিভাবে ভোট চাইব, কিভাবে প্রচারণা চালাব সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মনোনয়ন ফরম পূরণের বিষয়গুলো শেখানো হয়েছে।
সিলেট-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল মালিক বলেন, নির্বাচনী আইন মেনে চলে সরকারকে সহযোগিতা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এলাকায় মানুষের কাছে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।