
একসঙ্গে ৪ স্ত্রীর বেশি রাখা বৈধ নয়। তবে জীবনে ৮-১০টা বিবাহ হওয়া কোনো অন্যায় বা ভর্ৎসনার বিষয় নয়-এমনটাই মন্তব্য করেছেন আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরোর কর্ণধার ও ইসলামী বক্তা মামুনুর রশিদ কাশেমী।
তার এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তিনি ওয়েবসাইটে লিখেছেন, কোনো গতানুগতিক ঘটক অফিস নয়। এটি উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত একটি বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম।
এখানে মুসলিম উম্মাহের সুখী দাম্পত্য জীবন গড়ার সুপরামর্শ দেওয়া হয়। বিবাহ, তালাক ও দাম্পত্য জীবনের সব বিষয়ে শরয়ী দিকনির্দেশনা দেওয়া হয় এবং সব নারী-পুরুষের সহজে বিবাহের জন্য দাওয়াতি মেহনত করা হয়। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে মাসনা, সুলাছা, রুবাআ ও ওয়াহেদা দীনদার পাত্রী ও পাত্রের সন্ধান পাওয়া যায়।
কাশেমী তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ এমন রয়েছে, যার একটা স্ত্রী টিকতে এই পর্যন্ত ৩-৪টা বিবাহ হয়েছে।
কারো স্ত্রী পরপর দুইটা মারা গিয়েছে। করো একটা মারা গিয়েছে একটা ডিভোর্স হয়েছে। এভাবেই ৩-৪টা বিয়ে হওয়ার পর আপাতত তার একজন স্ত্রী আছে। অতএব যারা একত্রে চারজন স্ত্রী রাখবে, এটাই স্বাভাবিক যে তারও দুই তিনটা স্ত্রী সঙ্গে যৌক্তিক কারণে তালাক হতে পারে।
সাহাবাদের জীবনেও অনেক তালাক হয়েছে।’
তবে নির্যাতনকারী স্বামীর বিষয়ে লিখেছেন, ‘হ্যাঁ, যদি সত্যিই কেউ জুলুম করে তাহলে এক বৌ হোক আর একাধিক সবাই অপরাধী। যে জালেম, সে এক স্ত্রীর ওপরও জুলুম করে। আর যে আদেল সে একাধিক স্ত্রীর প্রতিও আদেল। এই জন্যই এক স্ত্রীর ওপর জুলুমকারী বাংলাদেশে লাখ লাখ পুরুষ রয়েছে।
লাখ লাখ নারী নির্যাতন মামলা ঝুলছে, যদিও অধিকাংশই মিথ্যা মামলা। তা কারোর অজানা নয়। ঠিক দ্বিতীয় তৃতীয় বিবাহকারী অনেক পুরুষও স্ত্রীদের প্রতি জালিম হয়, পুরোপুরি ইনসাফ আদায় করে না। আমরা তাদেরকে সঠিক পথে আসার আহ্বান জানাই।’
কাশেমীও একাধিক বিয়ে করেছেন জানিয়ে লিখেছেন, ‘যারা আমাকে বা অন্য যে কারো নামে ৮-১০টা বিবাহ করেছে বলে খারাপ মন্তব্য করেন। তাদেরকে একটি কথা বলব: আজ নাস্তিক, মুরতাদদের সুরে সুর মিলিয়ে আপনিও যদি অনেকগুলো বিবাহ এবং তালাককে জঘন্য বলেন, আর বর্তমান সময় এটা বুঝিয়ে দেন যে, যাদের জীবনে অনেকগুলো বিয়ে হয়েছে তারা খারাপ মানুষ। আর এটাই যদি স্টাবলিস্ট হয়ে যায়, আগামী প্রজন্ম যখন সাহাবাদের ১০-১৫টি বিবাহের কথা শুনবে, রাসূল সা: এর ১৫-১৬টি বিবাহের কথা যখন শুনবে সেদিন, তাদেরকেও গালি দিয়ে আপনার সন্তান নাস্তিক হবে।’
তিনি ব্যাখ্যা দেওয়ার কারণ উল্লেখ করে বলেন, ‘আরে নাস্তিকরা তো নবীদেরকেও একাধিক স্ত্রী নিয়ে গালি দেয়। এমনকি জান্নাতে ৭০ জন স্ত্রী হবে এটা নিয়েও মন্তব্য করে। আপনিও তাদের সুরে সুর মিলাচ্ছেন। আর এই জন্যই বিষয়গুলোকে স্পষ্ট করার চেষ্টা করছি। সাহাবাদের জীবনে অনেকগুলো বিবাহ হয়েছে, অনেকগুলো তালাক হয়েছে, তবে সবগুলো ছিল যৌক্তিক এবং আদর্শিক। অতএব বর্তমানেও যদি কারো অনেকগুলো বিবাহ হয় এবং তালাক হয়, চাই এক স্ত্রী আলা হোক বা একাধিক স্ত্রী বিশিষ্ট, যদি তাদের তালাকের মাঝে কোনো জুলুম অত্যাচার না থাকে, উভয়ে যদি আদর্শিক হয় তাহলে কোনো সমস্যা নেই।’