‘তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করে মা। আর স্বাদের খাবারও খেতে ইচ্ছা করে। ইচ্ছা করে বন্ধুদের সঙ্গে ছোটোছুটি করতে খেলাধুলা করতে। কিন্তু আমি চোখে ঝাপসা দেখছি। ভালোমতো খেতেও পারছি না। দৌড়ানোর শক্তিও নেই। আমি আবার কবে তোমাকে দেখতে পাবো মা! আমি কি আর তোমাকে দেখতে পাব না মা?’
অতিকষ্টের কথাগুলো বলেছে অভিজিত সরকার নামের ৬ বছরের ছোট্ট এক শিশু। তার বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলার শেরকোল বন্দর এলাকায়। তার বাবার নাম উত্তম সরকার, মা টপি রাণী সরকার।
গত এপ্রিল মাসে ছোট্ট অভিজিতের শরীরে এক বিরল রোগ ধরা পড়ে। ঢাকার ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইন্সের নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মালিহা হাকীম বলেছেন- এ রোগের নাম লিউকোডায়োসট্রফি। এ রোগে মানুষের দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। হাঁটাচলা দুরূহ হয়ে পড়ে। খাবারে অরুচি আসে। প্রস্রাবেও সমস্যা তৈরি হয়।
অভিজিতের বাবা উত্তম সরকার জানান, অভিজিতের এই রোগের জন্য গত ২ মাসে চিকিৎসা বাবদ প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। ডা. মালিহা হাকীম তাদের জানিয়েছেন- অভিজিতের লিউকোডায়োস্ট্রফির উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে নিতে হবে, এজন্য প্রয়োজন কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা।
অভিজিতের দরিদ্র পিতা বলেন, আমি গার্মেন্টসে ছোট চাকরি করি। এত টাকা কোথায় পাব! তাই তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
অভিজিতের মা টপি রাণী বলেন, আমার একটাই সন্তান। একমাত্র সন্তান যখন বলে- ‘মা তোমায় আবার কবে দেখতে পাব’- তখন কষ্টে আমার বুক ফেটে যায়। স্বল্প আয়ের মানুষ হওয়ায় আমরা আমাদের সন্তানের উপযুক্ত চিকিৎসা করাতে পারছি না। তিনি তার একমাত্র সন্তানের চিকিৎসায় সাহায্যের জন্য সমাজের বিত্তবান ও দানশীল ব্যক্তিদের প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছেন।
সিংড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু দাউদ বলেন, সমাজসেবা থেকে ৬টি সুনির্দিষ্ট রোগের চিকিৎসার জন্য অনুদান দেয়। এর মধ্যে এই রোগটি পড়ে না তবুও জেলা কার্যালয়ে আবেদন করলে চেষ্টা করা হবে।
সিংড়া উপজেলার নবাগত নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল রিফাত বলেছেন, এমন বিষয় তার জানা নেই। এ বিষয়ে আবেদন নিয়ে এলে তিনি সাধ্যমতো সহযোগিতার ব্যবস্থা করবেন।
অভিজিতের জন্য তার মা টপি রাণীর ডাচ বাংলা ব্যাংক, নাটোর শাখার ২৬৮৭৩৪৮৭৬৩৬৯৯ সঞ্চয়ী হিসাব নম্বরে সাহায্য পাঠানো যাবে।