Logo
Logo
×

জাতীয়

ভেতরের গল্প: যে কারণে মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে হত্যা করে গৃহকর্মী

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১৬ পিএম

ভেতরের গল্প: যে কারণে মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে হত্যা করে গৃহকর্মী

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার পেছনে যে ঘটনা জড়িত ছিল, তা সন্দেহের বাইরে গিয়ে এখন অনেকটাই স্পষ্ট।

গৃহকর্মী আয়েশা এবং তাঁর স্বামী জামাল সিকদার রাব্বিকে গ্রেপ্তারের পর জবানবন্দি ও তদন্তে উঠে এসেছে ঘটনার সঠিক ধারাবাহিকতা-চুরির অভিযোগ ঘিরে তীব্র বাকবিতণ্ডা এবং হাতাহাতি থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর তাঁরা ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়ারচর গ্রামে গিয়ে আয়েশাকে আটক করে।

হত্যার পর তিনি শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে লুকিয়ে ছিলেন। একই সময় সেখান থেকেই তাঁর স্বামীকেও হেফাজতে নেওয়া হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ–পুলিশ কমিশনার জুয়েল রানা বলেন, সিসিটিভি বিশ্লেষণ, প্রযুক্তিগত তথ্য এবং গ্রাউন্ড সোর্স-সব মিলিয়ে মাত্র এক দিনে ‘সূত্রহীন’ এই মামলার রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা জানিয়েছেন, ঘটনার আগের দিন বাসায় কিছু টাকা-পয়সা ও জিনিসপত্র না পাওয়ায় গৃহকর্ত্রী লায়লা আফরোজ তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্ক হয়। পরদিন কাজে গেলে আবারও তাঁকে চুরির সন্দেহ করা হয়।

গৃহকর্ত্রী তাঁকে তল্লাশি করা ও পুলিশে দেওয়ার কথা বললে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ধস্তাধস্তির সময় রান্নাঘরের ছুরি তুলে লায়লা আফরোজকে আঘাত করেন।

চিৎকারে মেয়েটি-নবম শ্রেণির ছাত্রী নাফিসা-ঘরে ঢুকলে তাকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন আয়েশা। পরে বাসা থেকে দুটি ল্যাপটপ ও একটি মোবাইল নিয়ে বেরিয়ে যান।

পালানোর সময় নিজের পরিচয় আড়াল করতে নাফিসার স্কুল ড্রেস পরে বাইরে বের হন।

আয়েশার স্বামী জামাল সিকদার রাব্বি বলেছেন, “ল্যাপটপ আর ফোন নিতে গিয়ে ম্যাডাম বুঝে ফেলায় সে ভয় পেয়ে ছুরি চালায়। তারপর মেয়েটা এগিয়ে এলে তাকেও মারে।”

পুলিশের দাবি, এরপর গণমাধ্যমে বিষয়টি আলোচনায় এলে তারা দুজনই ঝালকাঠির দিকে পালিয়ে যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা জানান, দুটি ল্যাপটপের একটি তিনি বিক্রি করেছেন। অন্যটি পুলিশ উদ্ধার করেছে। মোবাইল ফোনটি তিনি পানিতে ফেলে দিয়েছেন বলে দাবি করেন। বাকি মালামাল উদ্ধারে অভিযান চলছে। পুলিশ বলছে, এই ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত কি না-তা তদন্তে নিশ্চিত হবে।

গত সোমবার সকালে মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি সাততলা ভবনে লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজ (১৫) ছুরিকাঘাতে নিহত অবস্থায় পাওয়া যায়।

ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গৃহকর্মী আয়েশা বোরকা পরে ভবনে প্রবেশ করেন এবং পরে নাফিসার স্কুল ড্রেস পরে বের হয়ে যান।

তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, একাধিক টিম তদন্তে যুক্ত ছিল। সিসিটিভি বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নলছিটি এলাকা থেকে আয়েশাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার