Logo
Logo
×

জাতীয়

পরিচয় পাওয়া গেল সেই গৃহকর্মী আয়েশার

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২৮ পিএম

পরিচয় পাওয়া গেল সেই গৃহকর্মী আয়েশার

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়ে হত্যার ঘটনায় মূল আসামি আয়েশাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা যায় বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠী জেলার নলছিটি নিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জোড়াখুনের ঘটনায় জড়িত গৃহকর্মী আয়েশাকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।’

ওসি জানান, বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি জেলার নলছিটি এলাকায় গৃহকর্মী আয়েশার দাদা শ্বশুরের গ্রামের বাড়ি। সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নলছিটি থানার ওসি আশরাফ আলী বলেন, ‘আয়েশার স্বামীর বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে গ্রেপ্তারের সময় আয়েশার হাতে ব্যান্ডেজ দেখা গেছে। তার বাম হাতের কব্জিসহ তালু পর্যন্ত ব্যান্ডেজ রয়েছে। পুলিশের ধারণা, হত্যার সময় আঘাত পেয়েছেন আয়েশা। পরে তিনি কোথাও থেকে চিকিৎসা নিয়ে হাতে ব্যান্ডেজ করিয়েছেন।

এর আগে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) গৃহকর্মী আয়েশা মোহাম্মদপুরে মা লায়লা ফিরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যা করে পালিয়ে যান। সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে তিনি বোরকা পরে লিফটে উঠে ৭ তলায় যান। পরে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে মুখে মাস্ক লাগিয়ে কাঁধে একটি ব্যাগ ও স্কুল ড্রেস পরে বেরিয়ে যান। নিহত নাফিসা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

চার দিন আগে লায়লা আফরোজের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন ওই নারী। প্রতিদিনই তিনি বোরকা পরে বা মুখমণ্ডল ঢেকে আসা–যাওয়া করতেন। ফলে ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরায় তার মুখ ধরা পড়েনি। নিহত লায়লা আফরোজ ও তার কিশোরী মেয়ে নাফিসা ছাড়া আর কেউ তার চেহারা দেখেনি। তাই তার নাম–পরিচয়সহ কোনো ব্যক্তিগত তথ্য উদ্ধার সম্ভব হয়নি।

সোমবার সকাল ৭টায় কর্মস্থল উত্তরায় যান লায়লার স্বামী আজিজুল ইসলাম, যিনি পেশায় শিক্ষক। কর্মস্থলে পৌঁছে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি। পরে সকাল ১১টার দিকে বাসায় ফিরে দেখেন, স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) বাসার ভেতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।

বাসার প্রধান ফটকের কাছে মেয়ে নাফিসা নাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে আজিজুল ইসলাম দেখতে পান। গৃহকর্মী সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বাসায় প্রবেশ করেন এবং ৯টা ৩৫ মিনিটে তার মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। বের হওয়ার সময় তিনি একটি মুঠোফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যান।

এই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ওই নারীকে একমাত্র আসামি করে সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন আজিজুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, ঘটনার পর ভবনের এক নিরাপত্তাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। তিনি জানান, চার দিন আগে এক নারী কাজের খোঁজে ভবনের সামনে এলে লায়লা আফরোজের পরিবারের অনুরোধে তাকে বাসায় নিয়ে যান। তবে ওই নারীর সঙ্গে তার পূর্ব পরিচয় ছিল না।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার