Logo
Logo
×

জাতীয়

চলতি মাস থেকে এমআরপি বন্ধ হচ্ছে বিদেশি মিশনেও

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০০ এএম

চলতি মাস থেকে এমআরপি বন্ধ হচ্ছে বিদেশি মিশনেও

চলতি ডিসেম্বর থেকেই মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) দেওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দেশের সব জেলা এবং বেশির ভাগ বিদেশি মিশনে ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চলতি মাসের শেষ দিকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।

সূত্র জানায়, হাতে লেখা পাসপোর্ট তুলে দিয়ে ২০১০ সালে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট বা এমআরপি প্রবর্তন করা হয়। কিন্তু এমআরপি ঘিরে নানা ধরনের জাল-জালিয়াতি ধরা পড়ায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবিশিষ্ট ই-পাসপোর্ট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর ২০২০ সাল থেকে দেশের অভ্যন্তরে ই-পাসপোর্ট বিতরণ শুরু হয়। বর্তমানে দেশের সব জেলা থেকেই ই-পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ৭০টি বাংলাদেশ মিশনের মধ্যে ৬৫টিতে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু হয়েছে।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর বলছে, একই সঙ্গে দেশে দু’ধরনের পাসপোর্ট চালু থাকায় ভিসা ইস্যুর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো এক ধরনের বিভ্রান্তিতে পড়ে। এছাড়া নিরাপত্তা ঘাটতির সুযোগে এমআরপি ঘিরে নানা ধরনের জাল-জালিয়াতির সুযোগ নেয় মানবপাচার চক্র। এ কারণে ২০২৩ সাল থেকেই দেশের অভ্যন্তরে নতুন এমআরপি আবেদন নেওয়া বন্ধ। তবে এখনও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলো থেকে এমআরপি দেওয়া হয়। যা ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে বন্ধের প্রস্তাব করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর থেকে বিদেশি মিশনে নতুন করে আর কোনো এমআরপি আবেদন নেওয়া হবে না। তবে মেয়াদ উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত নাগরিকদের হাতে থাকা এমআরপি বৈধ। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তাদের এমআরপির স্থলে ই-পাসপোর্ট নিতে হবে।

তবে সরকারের এ সিদ্ধান্তে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে অনেকেই জটিলতার মুখে পড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া এবং ইতালিসহ বেশ কয়েকটি দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের অনেকের পাসপোর্টের তথ্যে ব্যাপক গরমিল রয়েছে। এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন জটিলতায় অনেকেই চাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ই-পাসপোর্ট করতে পারছেন না। এ অবস্থায় এমআরপি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে প্রবাসে অবস্থানরত অনেকেই ঝুঁকির মধ্যে পড়বেন। এমনকি যথাসময়ে পাসপোর্ট নিতে না পারলে অনেকে পিআর (স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি) নিয়ে জটিলতা এবং কর্মস্থলে চাকরিচ্যুতির শিকার হতে পারেন।

তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভিসা আবেদনে কতিপয় নাগরিকের তথ্য গোপন ও জাল-জালিয়াতির কারণে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশি পাসপোর্টে ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার দিন দিন আরও বাড়ছে। এমনকি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি থাকার পরও অনেক দেশ বাংলাদেশি পাসপোর্টের বিপরীতে বাস্তবে ভিসা অব্যাহতি কার্যকর করছে না। এ কারণে বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশি পাসপোর্টের মান ক্রমশ নিম্নমুখী। এ থেকে উত্তরণে পাসপোর্টের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতের কোনো বিকল্প নেই।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর বলছে, ই-পাসপোর্ট চালুর ৬ বছর পার হতে যাচ্ছে। এরপরও এমআরপি ইস্যু করা সমীচীন হবে না। এতে সরকারের ব্যয় বহুগুণ বাড়বে। এছাড়া ইতোমধ্যে এমআরপি প্রকল্পের সব যন্ত্রপাতি মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। নতুন করে এসব যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন ও সফটওয়্যার আপডেট করতে হলে অন্তত আড়াইশ’ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। যা সরকারের ঘাড়ে বড় ধরনের বোঝা হিসাবে চেপে বসবে।

জানতে চাইলে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ নুরুস সালাম গণমাধ্যমকে বলেন, এখন প্রায় সব জায়গা থেকেই ই-পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। ফলে এমআরপি চালু রাখা আর যুক্তিযুক্ত হবে না। আমরা ডিসেম্বর থেকেই এমআরপি সেবা বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলছি। তবে সবার সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার