এনআইডি সংশোধনে বাড়ছে ফি, গুনতে হবে যত টাকা
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৪ পিএম
জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য সংশোধনে বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন প্রবিধানমালা অনুযায়ী, প্রথমবার তথ্য সংশোধনের আবেদন ফি ৩৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হচ্ছে, যা বর্তমানে ২৩০ টাকা। তবে একজন আবেদনকারী দ্বিতীয়, তৃতীয় বা পরবর্তী যেকোনোবার আবেদন করলে ফি গুনিতক হারে বাড়বে, সর্বোচ্চ পৌঁছাবে ৫,৭৫০ টাকায়।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কমিশনের ১০ম সভায় এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য তুলে ধরা হবে। অনুমোদন পেলে এনআইডি সংশোধনের খরচ মিলবে নাগরিকদের ওপরই।
ইসি–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে মাসে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ এনআইডি সংশোধনের আবেদন করেন। সময়মতো আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া, দালালের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এসব কারণে জনভোগান্তি আগেই ছিল। নতুন ফি কাঠামো কার্যকর হলে মানুষের কষ্ট আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ইসির অনেক কর্মকর্তা।
অন্যদিকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, কথায় কথায় আবেদন করার প্রবণতা কমাতেই বাড়তি ফি আরোপ করা হচ্ছে। তাদের দাবি, বারবার ভুল তথ্য দিয়ে অনেকে সংশোধনের জন্য ১০ বার পর্যন্ত আবেদন করেন, এতে কাজের চাপ বাড়ে এবং জনবল কম থাকায় দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব হয় না।
নতুন প্রবিধানমালায় মোট ৯টি ক্যাটাগরিতে আবেদন ভাগ করা হচ্ছে। আবেদনের ধরন অনুযায়ী ৭ দিন থেকে দেড় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। ছোটখাটো বানান ভুলের আবেদন ৭ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি হবে, নাম পরিবর্তন বা শিক্ষাগত যোগ্যতা সংশোধনের মতো আবেদন ১০ দিনে, আর জটিল আবেদনগুলো ২১ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির কথা বলা হয়েছে।
সবচেয়ে আলোচিত পরিবর্তন হলো, জন্মতারিখ সংশোধনের ক্ষমতা মাঠপর্যায় থেকে তুলে ঢাকায় নিয়ে আসা। অর্থাৎ জন্মতারিখ সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করবেন জাতীয় পরিচয় অনুবিভাগের মহাপরিচালক নিজে। এতে গ্রামের মানুষের ঢাকায় আসতে হবে, অধিক কাগজপত্র দেখাতে হবে—ফলে সময়, খরচ ও ঝামেলা বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, আপিল ও রিভিশন উভয়ের জন্যই ফি রাখা হয়েছে ৫,৭৫০ টাকা করে। অর্থাৎ আবেদন নাকচ হলেও এই ফি ফেরত পাওয়া যাবে না। বর্তমানে আপিল করতে আলাদা টাকা লাগে না, কিন্তু নতুন নিয়মে আবেদন করলেই ফি দিতে হবে।
সব মিলিয়ে, সংশোধনী পাস হলে এনআইডি সংশোধনে আগের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি খরচ পড়বে নাগরিকদের।