খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:২২ পিএম
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। শ্বাসনালির সংকট, ফুসফুসের সংক্রমণ এবং হৃদযন্ত্রের জটিলতা মিলিয়ে তার শারীরিক অবস্থা এখনো নাজুক।
চিকিৎসকরা বলছেন, পরিস্থিতিতে গুরুতর স্থিতিস্থাপকতা থাকলেও বিদেশে নেওয়ার মতো স্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। গত ৬ ডিসেম্বর রাতে চিকিৎসক বোর্ড তাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত জানায়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে লন্ডনে নেওয়ার প্রস্তুতি আগেই শুরু হয়েছিল। সেই উদ্দেশ্যে বিমান যোগে নেওয়ার পরিকল্পনাও করা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে কাতার থেকে আকাশপথে পাঠানো বিশেষ বিমান ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি। জার্মানি থেকে নতুন উড়োজাহাজ ভাড়া করা হলেও তার আগেই যাত্রা সম্ভব নয়। সব ঠিক থাকলে ৯ ডিসেম্বরের পর নতুন তারিখে নেওয়া হতে পারে। তবে পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে চিকিৎসকদের অনুমোদনের ওপর।
এদিকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্ত হয়েছেন দেশের বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য ও চীনের চিকিৎসক দল। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েই তার জন্য চলমান চিকিৎসা পদ্ধতি পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসকেরা প্রতিটি সিদ্ধান্তই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে নিচ্ছেন।
তার শারীরিক বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে বিএনপির ভেতরেও উদ্বেগ বাড়ছে। দলের অনেকেই মনে করছেন, খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে না পারলে এবং পুনরায় সুস্থ হতে দীর্ঘ সময় লাগলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা তৈরি হতে পারে। তবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সাংগঠনিক সমন্বয় বজায় থাকায় দৈনন্দিন সিদ্ধান্তে কোনো শূন্যতা তৈরি হয়নি।
চিকিৎসক বোর্ড জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার অবস্থা এখনো অস্থির। শুক্রবার বা শনিবার তার বিদেশযাত্রার সম্ভাবনা থাকলেও সেদিন অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরিকল্পনা পিছিয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ৯ বা ১০ ডিসেম্বরের পর তাকে লন্ডনে নেওয়া হতে পারে। চীনের একটি চিকিৎসক দল ঢাকায় পৌঁছালেও তারা এখনো পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসায় সম্পৃক্ত হননি।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। দেশজুড়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা দোয়া মাহফিলে অংশ নিচ্ছেন এবং দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন। একই সঙ্গে দলের ভেতর থেকে ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান ও সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা আলোচনা তৈরি হয়েছে।
এখন নজর সবই চিকিৎসা-বোর্ডের পরবর্তী সিদ্ধান্তে। তারা যদি তাকে বিমানযাত্রার উপযুক্ত ঘোষণা করেন, তাহলে দ্রুত লন্ডনের পথে নেওয়া হবে। সেখানে উন্নত চিকিৎসায় তার শারীরিক স্থিতি কতটা ফেরানো যায়, সেটিই নির্ধারণ করবে তার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ পথচলার দিকনির্দেশনা।