এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কী, খরচ কেমন হতে পারে?
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২২ এএম
হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক বা গুরুতর অসুস্থতা—জরুরি মুহূর্তে জীবন বাঁচাতে অনেক সময় মিনিটও মূল্যবান হয়ে ওঠে।
বিশেষ করে রোগী যদি দূরবর্তী অঞ্চলে থাকেন বা দ্রুত উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়ার প্রয়োজন হয়, তখন সড়কপথে অপেক্ষা করা ঝুঁকিপূর্ণ।
এমন সংকটময় অবস্থায় বিশ্বজুড়ে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স; যা আকাশপথে রোগীকে অতি দ্রুত এবং নিরাপদে চিকিৎসাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা রাখে।
জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জামসজ্জিত এই বিশেষ উড়োজাহাজ বা হেলিকপ্টার শুধু দ্রুত স্থানান্তরই নয়, বরং পথচলতি সময়ে পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ সুবিধা দিয়ে রোগীর জীবন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এতে থাকে ভেন্টিলেটর, ডিফিব্রিলেটর, মনিটর, ওষুধ এবং পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ সেটআপ।
রোগীর সঙ্গে থাকেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও প্যারামেডিক টিম, যারা পুরো যাত্রায় রোগীর অবস্থান নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন।
এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দুই ধরনের
১. ফিক্সড-উইং ফ্লাইট অ্যাম্বুলেন্স
ফিক্সড-উইং এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বলতে সাধারণত জেট বা টার্বোপ্রপ বিমানগুলোকে বোঝায়। এই বিমানগুলো উচ্চ গতিতে এবং দীর্ঘ দূরত্বের পথে উড্ডয়নের জন্য উপযুক্ত।
আন্তঃশহর বা আন্তর্জাতিক রুটে যখন রোগীকে কয়েকশ বা হাজার কিলোমিটার দূরে স্থানান্তরের প্রয়োজন হয়, তখন এই পরিষেবাটি ব্যবহার করা হয়।
এর প্রধান সুবিধা হলো, এদের কেবিন সাধারণত বড় হয়, যেখানে উন্নত এবং পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ সেটআপ স্থাপন করা সম্ভব।
দূরপাল্লার ফ্লাইটে রোগীদের আরামদায়ক এবং স্থিতিশীল পরিবেশে চিকিৎসা প্রদানের জন্য এই ধরনের বিমান অত্যন্ত কার্যকর।
২. রোটারি-ফ্লাইট অ্যাম্বুলেন্স
রোটারি-ফ্লাইট অ্যাম্বুলেন্স বা হেলিকপ্টার অ্যাম্বুলেন্সগুলো স্বল্প দূরত্বে দ্রুত স্থানান্তরের জন্য ব্যবহৃত হয়।
এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলো দ্রুত উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারে এবং এর জন্য বড় রানওয়ের প্রয়োজন হয় না; বরং হাসপাতাল প্রাঙ্গণ, খোলা মাঠ বা জরুরি ল্যান্ডিং প্যাড ব্যবহার করতে পারে।
প্রত্যন্ত বা দুর্গম এলাকা থেকে রোগীকে উদ্ধার করে দ্রুত কাছের একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য হেলিকপ্টারই সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম।
এগুলো মূলত শহর বা দেশের অভ্যন্তরে জরুরি ‘বেড-টু-বেড’ স্থানান্তরের সুবিধা প্রদান করে।
এয়ার অ্যাম্বুলেন্স খরচ কেমন হতে পারে?
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের খরচ একটি প্রিমিয়াম পরিষেবা হওয়ায় বেশ ব্যয়বহুল।
বাংলাদেশ হেলিকপ্টার সেবার তথ্য মতে, দেশের ভেতরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের ভাড়া ৯০ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ লাখ পর্যন্ত (অঞ্চলভেদে) হতে পারে।
আর দেশের বাইরে এই খরচ কয়েক লাখ ছাড়িয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক হলো স্থানান্তরের দূরত্ব এবং রুটের প্রকৃতি। দ্বিতীয়ত, বিমানের প্রকারভেদ।
এ ছাড়াও রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; যেমন রোগীর যদি ভেন্টিলেটর বা ইসিএমও-এর মতো বিশেষ যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়, তবে বিশেষায়িত মেডিকেল টিমের কারণে খরচ বৃদ্ধি পায়।
বিমানবন্দর ব্যবহারের ফি, ল্যান্ডিং চার্জ, এবং অন্যান্য লজিস্টিকস খরচও মোট ব্যয়ের অন্তর্ভুক্ত থাকে। এসব কারণের ভিত্তিতে চূড়ান্ত মূল্য পরিবর্তিত হয়।
সূত্র : ইমার্জেন্সি অ্যাসিস্ট্যান্স প্লাস ডট কম