Logo
Logo
×

জাতীয়

ছাত্রীকে ‘ধর্ষণ’ করে শিক্ষক, ‘ভিডিওধারণ’ করে শিক্ষিকা

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫০ পিএম

ছাত্রীকে ‘ধর্ষণ’ করে শিক্ষক, ‘ভিডিওধারণ’ করে শিক্ষিকা

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রুপা আক্তারের (১৪) আত্মহত্যার ঘটনায় দুই শিক্ষককে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক ও তার সহযোগী আরেক নারী শিক্ষক। ওই শিক্ষার্থী মুকসুদপুরের বামনডাঙ্গা আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসার পঞ্চম জামাতের শিক্ষার্থী ছিলেন।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে মৃতের মা বেবী বেগম বাদী হয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান শিকদার (৫১) ও শিক্ষিকা খাদিজা বেগমকে (৩০) আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের পর শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে পুলিশ শিক্ষিকা খাদিজা বেগমকে গ্রেপ্তার করে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (০৪ ডিসেম্বর) এলাকাবাসী শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান শিকদারকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর থেকে ওই শিক্ষক পুলিশ পাহারায় মাদারীপুরের রাজৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে আজ শুক্রবার তাকে মুকসুদপুর থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার গোহালা ইউনিয়নের বামনডাঙ্গা গ্রামের নিজ বাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রুপা আক্তার আত্মহত্যা করে।

এর আগে, গত ২৬ নভেম্বর ওই মাদ্রাসা ছাত্রী শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান শিকদার কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হন এবং ধর্ষণের চিত্র মোবাইলে ধারণ করে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। আর এ কাজটি করেছেন মাদ্রাসার আরেক শিক্ষক এবং এই মামলার অপর আসামি খাদিজা বেগম। ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং এ কারণেই সে আত্মহত্যা করেছে, বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।

গণধোলাইয়ে অসুস্থ হওয়ায় পুলিশ তাকে পার্শ্ববর্তী মাদারীপুর জেলার রাজৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়।

অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান শিকদার বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার বারাশিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদ শিকদারের ছেলে ও খাদিজা বেগম মুকসুদপুর উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের ফজলু খালাসীর মেয়ে।

নিহতের বড় বোন সাদিয়া আক্তার বলেন, শিক্ষিকা খাদিজা বেগম আমার বোনকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় মাদ্রাসার ছাত্রদের পাঠিয়ে আমার বোনকে ডেকে পাঠাতো। সে যেতে না চাইলে ওই শিক্ষিকা ফোন দিয়ে ওই শিক্ষককে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতো। এসব কারণেই আমার বোন আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসি চাই।

ওই শিক্ষার্থীর মা বেবী বেগম জানান, গত ২৬ নভেম্বর শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মাদ্রাসা ছুটির পর আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে। আর এই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ ও ধর্ষণে সহযোগিতা করে শিক্ষিকা খাদিজা বেগম। ঘটনার পর আমার মেয়ে বাড়িতে এসে বিষয়টি আমাদের জানায়। এরপর থেকে আমার মেয়ে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেয়। লোকলজ্জায় আমরা বিষয়টি চেপে যাওয়ার চেষ্টা করি।

কিন্তু, ওই শিক্ষক তার সহযোগী শিক্ষিকার মাধ্যমে মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। একারণে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

মুকসুদপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষিকাকে আসামি করে ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত দুই আসামিকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার