Logo
Logo
×

জাতীয়

দলিল রেজিস্ট্রেশনে এলো বড় পরিবর্তন

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৫০ পিএম

দলিল রেজিস্ট্রেশনে এলো বড় পরিবর্তন

সারা দেশে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দলিল রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনছে সরকার। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দীর্ঘদিন ধরে দালাল ও দলিল লেখকদের সিন্ডিকেট, অতিরিক্ত ফি আদায় এবং জটিল প্রক্রিয়ার কারণে সাধারণ ভূমি মালিকদের ভোগান্তি কমাতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

ভূমি মন্ত্রণালয় জানায়, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন ফি এখন থেকে জমির ধরণ ও দলিলের শ্রেণীভেদে স্পষ্ট করে নির্ধারণ করা হবে। সেই ফি কাঠামোর তালিকা দেশের প্রতিটি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে বাধ্যতামূলকভাবে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। ফলে কোনো জমির দলিল করতে কত টাকা প্রয়োজন, স্ট্যাম্প খরচ, রেজিস্ট্রেশন ফি, আইটি সার্ভিস চার্জ—সব মিলিয়ে মোট ব্যয় কত হবে, তা নাগরিকরা আগেই জেনে নিতে পারবেন।

দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল—সাব-রেজিস্টারি অফিসে গেলে ভূমি মালিকদের দলিল লেখকদের সিন্ডিকেটের উপর নির্ভর করতে হতো। তারা গণনাহীন 'হিসাব' দেখিয়ে পূর্ব নির্ধারিত ফি'র চেয়ে কয়েক গুণ বেশি টাকা নিত। কেউ প্রতিরোধ করলে বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি করা হতো। এ ঘটনার লাগাম টানতেই সরকার দলিল লেখক লাইসেন্স বিধিমালা, ২০১৪ কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে যাচ্ছে। এখন থেকে শুধুমাত্র অনুমোদিত ও লাইসেন্সধারী দলিল লেখকরা অফিসে কাজ করতে পারবেন, অন্য কেউ নয়।

এছাড়া, যেসব ভূমি মালিক ফি গণনায় বিভ্রান্ত হন, তাদের জন্য অনলাইনে “দলিল রেজিস্ট্রেশন ক্যালকুলেটর” চালু করা হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ক্যালকুলেটর অ্যাপ ডাউনলোড করে জমির শ্রেণী, অবস্থান, পরিমাণ ও মৌজার তথ্য দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রকৃত খরচ জানিয়ে দেবে।

রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯০৮-এর ধারা ১৭ অনুযায়ী জমি ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত দলিল রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। আনরেজিস্টার্ড দলিলের ভিত্তিতে মালিকানা দাবি করা যাবে না, রেকর্ড সংশোধনও করা যাবে না—এই বিষয়েও সরকার ভূমি মালিকদের সচেতন করছে।

যদি কোনও দলিল লেখক বা অফিস সংশ্লিষ্ট কেউ বাড়তি টাকা দাবি করে বা প্রতারণা করে, ভূমি মালিকরা সরাসরি জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে পারবেন। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের নম্বরে কল করেও অভিযোগ জানানো সম্ভব।

সরকার মনে করছে, এই নতুন ব্যবস্থা চালু হলে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের পুরোনো দালালচক্রের আধিপত্য কমে আসবে, রেজিস্ট্রেশন খরচে স্বচ্ছতা তৈরি হবে এবং ভূমি মালিকেরা প্রতারণা থেকে রক্ষা পাবেন। নতুন নিয়ম ও ফি কাঠামো বাস্তবায়ন হলে ভূমি সেক্টরে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার