প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে দুঃসংবাদ
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১৬ পিএম
তিন দফা দাবিতে আবারও সারা দেশে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। তাদের কর্মসূচির ফলে বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) থেকে দেশজুড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে আসন্ন বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
শিক্ষক সংগঠনগুলো জানিয়েছে, দাবি পূরণে দ্রুত উদ্যোগ না নিলে তারা শুধু পরীক্ষা বর্জনই নয়, আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে অনশনেও যেতে পারেন। এতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক কোটির বেশি শিক্ষার্থীর বার্ষিক মূল্যায়ন কার্যক্রম ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক খায়রুন নাহার লিপি বলেন, সরকার পূর্বঘোষিত সময়সীমার মধ্যে কোনো বাস্তব অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। তাই বাধ্য হয়ে লাগাতার কর্মবিরতির পথে যেতে হলো। দাবি মানা না পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।
অন্য শিক্ষক নেতারা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে গত ১২ নভেম্বরের মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ না নেওয়ায় তিন লাখেরও বেশি শিক্ষক ক্ষুব্ধ ও হতাশ। এর আগেও তারা সীমিত আকারে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও সুফল পাওয়া যায়নি।
দেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক সংখ্যা ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৯৮১। এর মধ্যে প্রায় ৩৫ হাজার প্রধান শিক্ষক বাদ দিলে পুরো শিক্ষা কার্যক্রম নির্ভরশীল সহকারী শিক্ষকদের ওপরই। ফলে তাদের ধর্মঘট সরাসরি সরকারি প্রাথমিক শিক্ষার স্বাভাবিক প্রবাহকে ব্যাহত করছে।
প্রাথমিক পর্যায়ে মোট শিক্ষার্থী প্রায় এক কোটি ৯৭ লাখ। এর মধ্যে সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ছে এক কোটি ৯ লাখের বেশি শিক্ষার্থী, যা সামগ্রিক শিক্ষার্থীর অর্ধেকেরও বেশি। ফলে দীর্ঘমেয়াদি কর্মবিরতির প্রভাব সারা দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপকভাবে পড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করলে বছরে অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। আর ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নে সরকারের বাড়তি খরচ দাঁড়াবে প্রায় ৮৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।