মাত্র ১৩ ঘণ্টায় তিন ভূমিকম্প, এরপর কী বড় ঝাঁকুনি?
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম
মাত্র ১৩ ঘণ্টার ব্যবধানে বাংলাদেশে তিনটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। যদিও কম্পনগুলোর মাত্রা ছিল মৃদু থেকে মাঝারি, তবু সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার বাসিন্দারা বিকেল বেলায় হঠাৎ কম্পনের দোলায় নড়েচড়ে বসেছেন।
ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, গতকাল মধ্যরাত ৩টার পর থেকে আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে এই কম্পনগুলো অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনগুলোর মাত্রা ছিল ৩.৪ থেকে ৪ পর্যন্ত।
প্রথম কম্পনটি অনুভূত হয় বুধবার মধ্যরাতে। রাত ৩টা ২৯ মিনিটে টেকনাফ থেকে ১১৮ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে উৎপত্তি ঘটে ৪ মাত্রার কম্পন। কক্সবাজার জেলার টেকনাফ শহরে কেঁপে ওঠে এলাকা। তবে ভলকানো ডিসকভারি জানায়, টেকনাফে এটি খুব অল্প ঝাঁকুনির মতো অনুভূত হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ তা টের পাননি। ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) জানিয়েছে, কম্পনের উৎপত্তি মাটির প্রায় ১০ কিলোমিটার গভীরে।
এরপর মাত্র ২০ সেকেন্ড পরে, রাত ৩টা ৩০ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডে সিলেটে মৃদু কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩.৪। সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন জানান, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ভারতের মনিপুর। এটি মৃদু কম্পন হওয়ায় অনেকেই টের পাননি।
আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তৃতীয় কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩.৬। ইএমএসসি জানিয়েছে, কম্পনের কারণে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর এখনও পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোট বা মৃদু কম্পন সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত না করলেও এটি মানসিক চাপ বাড়ায় এবং মানুষকে সচেতন হওয়ার প্রয়োজন স্মরণ করিয়ে দেয়। ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র নিয়মিত সতর্কতা জারি করছে এবং সাধারণ জনগণকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে অবস্থান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছে।
আতঙ্ক বাড়াচ্ছে এক সপ্তাহের মধ্যে এটি তৃতীয় কম্পন। এর আগে, ২১ নভেম্বর সকালেও ঢাকাসহ সারাদেশে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের ঝাঁকুনি অনুভূত হয়, যা শিশুসহ ১০ জনের প্রাণহানি এবং ছয় শতাধিক আহতের ঘটনা ঘটায়।
বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের মুখে শুধু একটাই প্রশ্ন-পরবর্তী বড় ভূমিকম্প আসতে পারে কি না?
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, ভূমিকম্প কখনো পূর্বাভাস দেওয়া যায় না। তাই সবাইকে সজাগ থাকা এবং জরুরি প্রস্তুতি নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।