Logo
Logo
×

জাতীয়

কাদেরের রংপুর হয়ে পালানোর ‘কথিত’ গোয়েন্দা প্রতিবেদন নিয়ে তোলপাড়

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৭ পিএম

কাদেরের রংপুর হয়ে পালানোর ‘কথিত’ গোয়েন্দা প্রতিবেদন নিয়ে তোলপাড়

গেল বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঢাকা থেকে রংপুর হয়ে নীলফামারী সীমান্ত দিয়ে ভারতে পলায়ন করেছেন- এমন দাবিতে একটি ‘কথিত’ গোয়েন্দা প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

প্রতিবেদনে পলায়নে সহায়তাকারী হিসেবে সাবেক আইজিপি ময়নুল ইসলাম, ডিআইজি রেজাউল করিম, রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামছুজ্জামান সামু, রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী এবং এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখপাত্র সার্জিস আলমসহ পুলিশ প্রশাসনের আরো কয়েকজন শীর্ষ কর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথিত প্রতিবেদনটি ছড়িয়ে পড়ার পর রংপুরসহ সারা দেশে ব্যাপক সমালোচনা ও হৈচৈ সৃষ্টি হয়। তবে পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় বিএনপি এবং এনসিপি তিন পক্ষই একযোগে এটিকে মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন দাবি করে পুরো বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামছুজ্জামান সামুর নাম থাকা নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, ‘দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরপরই এমন মিথ্যা প্রতিবেদন ছড়ানো নিছক রাজনৈতিক খেলা। এই খেলাকে বিশ্বাসযোগ্য করতে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা, এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নাম ও জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে জড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে গত ১৬ নভেম্বর একটি সংবাদ সম্মেলন করেন শামছুজ্জামান সামু। তাতে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।

একইভাবে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখপাত্র সার্জিস আলমও চারদিন আগে তার ফেসবুক ওয়ালে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন। বলেছেন, যদি সার্জিস আলমের শুণ্য দশমিক শুন্য শুন্য শতাংশ প্রমাণ দিতে পারেন তাহলে পৃথিবীর কঠিনতম শাস্তি মেনে নিবো। আর যদি না পারেন তাহলে পাবলিকলি ক্ষমা চাইবেন।

রংপুর মহানগর পুলিশের একটি সূত্র বলছে, রংপুর পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী ওবায়দুল কাদেরকে ৮ সেপ্টেম্বর গাড়িতে করে রংপুর নিয়ে এসেছেন এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে কথিত ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে।

অথচ ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে করে পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগ দিতে সৈয়দপুর বিমানবন্দর পৌছান তিনি। পুলিশ অফিসার্স মেসে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সাইফুজ্জামান ফারুকী, ডিসি হেডকোয়ার্টার্স আবু বক্কর সিদ্দিক, ডিসি মেনহাজুল আলম, ডিসি ডিবি কাজী মুত্তাকী ইবনে মিনানসহ সিনিয়র অফিসাররা তাঁকে রিসিভ করেছিলেন। একই সঙ্গে ডিসি সিটিএসবি হাবীবুর রহমান কথিত এসপির মোবাইলসহ অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করার নির্দেশ দেওয়ার যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তা ঠিক নয়। ডিসি হাবিবুর রহমান গেল ২৮ আগস্ট থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর ছুটিতে ছিলেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো প্রতিবেদনটি সরকার, পুলিশ ও প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে কোনো চক্র ছড়িয়ে থাকতে পারে। একই সঙ্গে বিএনপি নেতা সামু ও সার্জিস আলমকে হেয় প্রতিপন্ন করতেও এটি প্রচার করা হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, এ ধরনের ভুয়া প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামছুজ্জমান সামু বলেন, আমাকে দল মনোনয়ন দেওয়ার পর একটি চক্র এমন নোংরামী করছে। ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। এটি মিথ্যা প্রোপাগান্ডা। আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার দেখে একটি মহল ঈর্শান্বিত হয়ে নোংরামি করছে। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার