আসিফ নজরুলের বক্তব্য এডিট করে দিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২২ এএম
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত সব ধরনের সংস্কার ও পরিবর্তন আইনের মাধ্যমেই এগিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। সোমবার (২৪ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর আদালতে ই-পারিবারিক আদালত কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, পারিবারিক বিরোধের ক্ষেত্রে এখন আর আদালতে যেতে হয় না; লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে বিনামূল্যে সেবা পাওয়া যায়। এ প্রক্রিয়ায় একজনের বদলে তিনজন বিচারককে যুক্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সংস্কার প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, বাস্তবতার আলোকে আরও পরিমিত ও দীর্ঘমেয়াদি ভাবনা প্রয়োজন। ‘আমরা খুব বেশি করতে পারিনি। তবে আশা করি নতুন সরকার উদ্যোগগুলো চালিয়ে যাবে। না হলে এগুলো ম্লান হয়ে যাবে,’ বলেন তিনি। অতিরিক্ত সংস্কারের চেষ্টায় রাষ্ট্র কাঠামোকে দুর্বল করা যাবে না বলেও সতর্ক করেন তিনি।
আইন মন্ত্রণালয়ে এ পর্যন্ত ২১টি ক্ষেত্রে সংস্কার হয়েছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্ততা ও ধারাবাহিকতা ছাড়া এসব পরিবর্তন টেকসই হবে না।
প্রযুক্তির ব্যবহার বিচারপ্রক্রিয়া সহজ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান উপদেষ্টার (ড. মুহাম্মদ ইউনুস) দুইটা বড় অফিস আছে। একটি তেজগাঁওয়ে, আরেকটি ওনার বাসার নিচতলায় অফিস। কিন্তু ওনার সবচেয়ে বড় অফিস কোনটা জানেন? উনার সবচেয়ে বড় অফিস হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ। আমি ওনাকে বক্তৃতা লিখে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছিলাম একবার। উনি আধা ঘণ্টার মধ্যে সে বক্তৃতা এডিট করে হোয়াটসঅ্যাপেই আমাকে পাঠিয়েছেন, বাংলাতে। তো আমরা কেন সবাই পারি না? হোয়াটসঅ্যাপই তো আপনার অফিস হতে পারে। সত্যিই পারে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উপস্থিত ছিলেন। পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, নতুন অনলাইন প্রক্রিয়া পেপারলেস সিস্টেমকে আরও এগিয়ে নেবে, যা তার কাছে আনন্দের বিষয়। আইনজীবীদের এ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ডিজিটাল কার্যক্রম আইনজীবীদের আরও দ্রুত ও কার্যকর সেবা দিতে সহায়তা করবে। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী জানান, ই-পারিবারিক আদালত বিচার ব্যবস্থাকে পেপারলেস সিস্টেমের দিকে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে নেবে।
আয়োজকরা জানান, ই-পারিবারিক আদালত চালুর ফলে মামলার দীর্ঘসূত্রিতা, অতিরিক্ত খরচ, দূরত্ব, কাগজপত্র ব্যবস্থাপনা, সময়ক্ষেপণ ও ভিড়ের মতো সমস্যা কমে আসবে। দ্রুত অনলাইন প্রক্রিয়া, কম খরচে সেবা, ঘরে বসে আবেদন, ডিজিটাল নথি, সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা রেজিস্ট্রেশন ও অনলাইন শিডিউলিংয়ের সুবিধাও মিলবে।
ঢাকা মহানগর আদালতের জগন্নাথ-সোহেল স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিচার বিভাগ, আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।