হার্ট ও ফুসফুসে ইনফেকশন হয়েছে খালেদা জিয়ার
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০২ এএম
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হার্ট ও চেস্ট (ফুসফুস) ইনফেকশন হয়েছে। এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার চিকিৎসা চলছে।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের একথা জানান।
তিনি বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরেই উনি খুব ঘন ঘন আক্রান্ত হচ্ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি কারণ উনার কতগুলো সমস্যা একসঙ্গে দেখা দিয়েছে। সেটা হচ্ছে, উনার চেস্টে ইনফেকশন হয়েছে। যেহেতু উনার হার্টের সমস্যা আগে থেকেই ছিল। উনার হার্টে পারমানেন্ট পেসমেকার আছে এবং হার্টে ওনার স্ট্যান্ডিং করা হয়েছিল, রিং পড়ানো হয়েছিল। তারপরেও উনার মাইট্রোস্টেনোসিস নামে একটা কন্ডিশন আছে সেজন্য চেস্টে হওয়াতে উনার একসঙ্গে হার্ট এবং ফুসফুস দুটোই আক্রান্ত হওয়াতে ওনার খুব রেসপিরেটরি ডিস্ট্রেস হচ্ছিল। সেজন্য এখানে আমরা খুব দ্রুত ওনাকে নিয়ে এসেছি।’
এফএম সিদ্দিকী বলেন, ‘হাসপাতালে আনার পর আমরা খুব তাৎক্ষণিকভাবে দ্রুত যে পরীক্ষাগুলো করা দরকার তা করেছি। আমরা প্রাথমিক যে রিপোর্ট পেয়েছি সে অনুযায়ী মেডিকেল বোর্ডের সবাই বসে প্রাথমিকভাবে উনাকে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছি। দ্রুত এবং জরুরি চিকিৎসা দেওয়ার দরকার হয় সেটা দিয়েছি।
তিনি বলেন, আশা করছি যে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও কিছু রিপোর্ট আসবে। উনি আমাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। পরবর্তী ১২ ঘণ্টার উনার পরিস্থিতি কী হয় সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই মুহূর্তে কেবিনে বেগম জিয়া আমাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা এবং মনিটরিং এর মধ্যে আছেন।
রাত ৮টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধায়নে আছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনকে হাসপাতালে নেওয়ার পরপর বেশ কিছু টেস্ট করা হয়। এরপর অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকাদারের সভাপতিত্বে মেডিকেল বোর্ড বৈঠকে বসে। এই বৈঠকে অধ্যাপক এফএস সিদ্দিকী, ডা. জাফর্ ইকবাল, ডা. জিয়াউল হক, ডা. মামুন আহমেদ, অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাইফুল ইসলাম এবং লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি ডা. জুবাইদা রহমান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে জনহোপকিংস হসপিটালের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অংশ নেন।
অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা নিয়ে আমরা সুচিকিসার ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করে নিবিড়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অত্যন্ত উৎকন্ঠিত কোনো বিষয় আমরা মনে করছি না। আমরা মনে করছি, উনার চিকিৎসাটা যদি এখন যেভাবে শুরু হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ তাহলে আগামী ১২ ঘণ্টা পর মেডিকেল বোর্ড আবার বসবে। বসার পর পরবর্তী উনার স্বাস্থ্যের অবস্থার উপর পর্যবেক্ষণ করে কি ধরনের চিকিৎসার পরিবর্তন আনা যায় সে অনুযায়ী ব্যবস্থা বোর্ড নেবেন।’
তিনি জানান, গতকাল ভোর রাত থেকে লন্ডন থেকে তারেক রহমান ও উনার সহধর্মিনী জুবাইদা রহমান তাদের ‘আম্মু’র ব্যাপারে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখছেন। এছাড়া ম্যাডামের ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সহধর্মিনী সৈয়দা শামিলা রহমান এখানেই আছেন। উনাদের আত্বীয় স্বজনরা ম্যাডামের চিকিৎসার ব্যাপারে সবসময় সহযোগিতা ও খোঁজ-খবর রাখছেন।
জাহিদ জানান. ম্যাডাম দেশবাসীর কাছে সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন। যেমনি অতীতেও ম্যাডামের জন্য দোয়া করেছেন দেশবাসী।
৭৯ বছর বয়সি খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ৬ মে দেশে ফেরেন।