চোখ রাঙাচ্ছে ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়, আন্তর্জাতিক আবহাওয়াবিদের বিশেষবার্তা
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৫২ পিএম
এমনিতেই ভূমিকম্পের আতঙ্কে ভুগছে দেশবাসী। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, আগামী ৭ দিনে আরও বেশ কয়েকবার কেঁপে উঠতে পারে দেশ। এর মধ্যেই এবার খবর ভয়ংকর এক ঘূর্ণিঝড়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে।
রোববার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক পোস্ট থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
ওই পোস্টে পূর্বাভাসের পাশাপাশি দেশবাসীর উদ্দেশে বিশেষ পরামর্শ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক মানের এ আবহাওয়াবিদ।
নিজের পোস্টে আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ লিখেছেন, ২৩ নভেম্বর পাওয়া সর্বশেষ আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুসারে, আগামী ২৬-২৭ নভেম্বর দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে (আন্দামান ও নিকবার দ্বীপের দক্ষিণ পাশে) একটি লঘুচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এই লঘুচাপটি পর্যায়ক্রমে নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ ও সর্বশেষে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
তিনি লিখেছেন, ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হতে যাচ্ছে এই বিষয়ে সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল একমত হলেও সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি কেমন পরিমাণে শক্তিশালী হবে ও কোন স্থানের উপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করবে এই বিষয়ে বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল ভিন্ন-ভিন্ন পূর্বাভাস দিচ্ছে। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য থেকে শুরু করে বাংলাদেশের চট্রগ্রাম উপকূলের মধ্যবর্তী যে কোন স্থানের উপর দিয়ে উপকূলে আঘাত করার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, ২৬ নভেম্বর অধিক নিশ্চয়তা সহকারে জানা যাবে, সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি কেমন পরিমাণে শক্তিশালী হবে ও কোন স্থানের উপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করবে।
নিজের পোস্টে কৃষকদের জন্য পরামর্শ দিয়ে এ আবহাওয়াবিদ লিখেন, সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশের উপরে হালাক থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ফলে, জমিতে থাকা পাকা আমন ধান কাটা ও মাড়াই করা শেষ করার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। শীতকালীন শাক-সবজি চাষিরা সম্ভব্য এই বৃষ্টিপাতের কথা মাথায় রেখে বীজ বোনা ও জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। ডিসেম্বর মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত জন্য রোদ্দৌজ্জল আবহাওয়া বিরাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে পুরো দেশে।
এরপর সমুদ্রগামী জেলেদের জন্য পরামর্শ দিয়ে তিনি লিখেন, ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখের পর থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র উত্তাল হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ১ ডিসেম্বরের মধ্যে উপকূলে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে সমুদ্রে মাছ ধরা সকল ট্রলারকে। ৩০ নভেম্বরের পরে নতুন করে সমুদ্রে মাছ ধরতে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সবশেষে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণেচ্ছু পর্যটকদের উদ্দেশে মোস্তফা কামাল পলাশ লিখেন, ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখের পর থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র উত্তাল হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত টেকনাফ ও সেন্টমার্টীন দ্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্র প্রচণ্ড উত্তাল থাকার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।