Logo
Logo
×

জাতীয়

ঢাকায় মিলল নয়া তথ্য, ভূমিকম্পে বদলে যায় গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র গতিপথ

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৯ পিএম

ঢাকায় মিলল নয়া তথ্য, ভূমিকম্পে বদলে যায় গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র গতিপথ

গবেষকরা ঢাকার রাস্তার পাশে খোঁড়া এক গর্ত থেকে এমন একটি প্রমাণ উদ্ধার করেছেন। যা প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করে যে, ভূমিকম্প শুধু পৃথিবীর ভূ-গঠন বদলায়ই না, এককালের নদীর গতিপথও পরিবর্তিত করতে পারে। নেদারল্যান্ডসের ওয়াগেনিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এলিজাবেথ চেম্বারলেনের নেতৃত্বে গবেষক দলটি ‘নেচার কমিউনিকেশনস’ জার্নালে এ ফলাফল প্রকাশ করেছে।

গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর বিশাল অববাহিকা নিয়ে করা এই গবেষণায় স্যাটেলাইট মানচিত্র ও ডিজিটাল এলিভেশন মডেলের মাধ্যমে নদীর প্রাচীন গতিপথ চিহ্নিত করা হয়। ঢাকার দক্ষিণাংশে ১০০ কিলোমিটার এলাকায় চলা জরিপের সময় রাস্তার পাশে খোঁড়া গর্তে গাঢ় কালো কাদামাটির স্তরের উপর হালকা রঙের পলিমাটির কলাম দেখা যায়। ভূমিকম্পের কারণে বালি ও কাদার অস্বাভাবিক নড়াচড়ার ফলে এই স্তর গঠিত হয়েছে, যা ‘বালির আগ্নেয়গিরি’ নামেও পরিচিত।

গবেষকরা ধারণা করেন, প্রায় ২,৫০০ বছর আগে কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ মাত্রার এক প্রবল ভূমিকম্প গঙ্গার গতিপথকে নাটকীয়ভাবে বদলে দিয়েছিল। অপটিক্যাল স্টিমুলেটেড লুমিনেসেন্স পরীক্ষার মাধ্যমে মাটির নমুনার বয়স নিরূপণ করে এই সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে।

নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-পদার্থবিদ ড. মাইকেল স্টেকলার বলেন, টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষ এই ভূমিকম্পের কারণ ছিল, যা গঙ্গার বদ্বীপ এলাকার ভূ-আকৃতি বদলে দিয়েছিল। ইউসিএলএ-এর সিভিল ও পরিবেশ প্রকৌশলবিদ্যার অধ্যাপক ড. জনাথন স্টুয়ার্ট জানান, নদীর গতিপথের এই অস্থিতিশীলতা ভবিষ্যতে প্রকৌশল ও অবকাঠামোগত পরিকল্পনার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, এই গবেষণায় পাওয়া তথ্য বাংলাদেশের ভূমিকম্প ঝুঁকি নিরূপণ ও পূর্ব সতর্কতা ব্যবস্থা গড়ে তোলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে তিনি আশাপ্রকাশ করেন, সরকার ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে সিসমিক পর্যবেক্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়ন ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হবে।

এই গবেষণার ফলে জানা গেল, পৃথিবীর শক্তিশালী ভূমিকম্প কেবল ভূ-গঠনই নয়, বড় বড় নদীর গতিপথকেও বদলে দিতে পারে, যা ইতিহাস এবং ভবিষ্যতের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার