Logo
Logo
×

জাতীয়

ভূমিকম্পে ৩ জেলায় ৬ জন নিহত

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০৬ পিএম

ভূমিকম্পে ৩ জেলায় ৬ জন নিহত

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুক্রবার (২১ নভেম্বর) আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে  রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশালে ৩ জন, নারায়ণগঞ্জে ২ জন ও  নরসিংদীতে ১ জন নিহত হয়েছেন।  এছাড়াও অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

ঢাকা

পুরান ঢাকার বংশালে ৫ তলা ভবনের রেলিং ধসে ৩ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী চ্যানেল 24 কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, রেলিং ধসে নিহত তিনজনের মধ্যে এক শিশুও রয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

নারায়ণগঞ্জ

জেলার রূপগঞ্জ উপজেলায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় দেয়াল ধসে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন তার মেয়ে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পরপরই বাড়ির একটি পুরোনো দেয়াল ধসে পড়লে মা–মেয়ে চাপা পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই মায়ের মৃত্যু হয়। আহত মেয়েকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম

একই উপজেলায় ভূমিকম্পে একটি টিনসেড বাড়ির দেয়াল ধসে ফাতেমা (১) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় শিশুর মা কুলসুম বেগম ও প্রতিবেশী জেসমিন বেগম আহত হয়েছেন।  সকাল ১০টা ৩৮মিনিটে ভূমিকম্পের সময় উপজেলার গোলাকান্দাইল ইসলামবাগ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয়রা জানান, ভূমিকম্পের সময় গোলাকান্দাইল ইসলামবাগ এলাকার কুলসুম বেগম তার মেয়ে ফাতেমাকে নিয়ে হেঁটে ভুলতা গাউছিয়া এলাকার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় রাস্তার পাশে একটি টিনসেড বাড়ির দেয়াল ধসে নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ফাতেমা। আহত হন তার মা কুলসুম বেগম ও প্রতিবেশী জেসমিন বেগম। পরে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ বিষয়ে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোখলেসুর রহমান বলেন, ভূমিকম্পে দেয়াল ধসে ফাতেমা নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় শিশুটি মা কুলসুম বেগম ও প্রতিবেশী জেসমিন বেগম গুরুতর আহত হয়েছেন। 

নরসিংদী

ভূমিকম্পের ঘটনায় নরসিংদীর সদর উপজেলার গাবতলী এলাকায় বাড়ির সানসেট ভেঙে ওমর (১০) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় তার বাবা দেলোয়ার হোসেন উজ্জল গুরুতর আহত হয়েছেন। দুপুর সোয়া ১টার দিকে স্বজনরা তাদের দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে চিকিৎসক ছেলে ওমরকে মৃত ঘোষণা করেন। 

হাসপাতালে ওমরের চাচা জাকির হোসেন জানান, ভূমিকম্পের সময় বাবা দেলোয়ার হোসেন ওমরসহ তিন সন্তানকে নিয়ে বাইরে যাচ্ছিলেন। এ সময় বাসার সানসেট ভেঙে তাদের উপড় পরে গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে বাবা ও ছেলেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক ছেলে ওমরকে মৃত ঘোষণা করেন। দুই মেয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে। 

এর আগে সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের দিকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির তীব্রতা ছিল ৫ দশমিক ৭। আর এর কেন্দ্রস্থল নরসিংদীর মাধবদী।

এদিকে ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে রাজধানীর কয়েকটি জায়গায় ভবন হেলে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় একটি ৬ তলা ভবন হেলে পড়েছে বলে জানা গেছে। 

অন্যদিকে শুক্রবার সকালে বাংলাদেশের পাশাপাশি প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানেও ভূমিকম্প অনূভত হয়েছে। কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় এ কম্পন অনুভূত হয়। এছাড়া সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী জানিয়েছে, শুক্রবার ভোরে পাকিস্তানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর কেন্দ্রস্থল ছিল ১৩৫ কিলোমিটার গভীরে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৫ মার্চ রাজধানীতে মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। রিখটার স্কেলে ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। তারও আগে ২৮ মে বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ২টা ২৪ মিনিটে ভারতের মণিপুর রাজ্যের মোইরাং শহরের কাছাকাছি আরেকটি ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ওই সময়ও ভূমিকম্পে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ রাজধানী ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলায় হালকা কম্পন অনুভূত হয়েছিল৷

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার