পে স্কেলের দাবিতে একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে রণকৌশল কর্মচারীদের
জেলায় জেলায় বিক্ষোভ, ঢাকায় মহা-সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচি এবং কর্মবিরতির মতো কর্মসূচি আসতে পারে
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:১৩ এএম
দীর্ঘ বিরতির পর সরকারি কর্মজীবীদের নতুন বেতন কাঠামো তৈরির জন্য কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিশন গঠনের পর অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন এই সরকারের আমলেই কার্যকর হবে নতুন পে স্কেল। কিন্তু সম্প্রতি তিনিই বলেছেন, আগামী নির্বাচিত সরকার পে কমিশন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। অর্থ উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পরই কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বদিউল কবির জানান, ‘যেহেতু এই অন্তর্বর্তী সরকারই পে কমিশন গঠন করেছে, তাই নতুন পে-স্কেলও এই সরকারকেই দিতে হবে।’ তিনি বলেন, নভেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে পে কমিশনের সুপারিশ জমা না পড়লে তারা কমিশনের ওপর চাপ বাড়ানো হবে। পাশাপাশি বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণেরও ইঙ্গিত দেন এই কর্মচারী নেতা।
পরে গত শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে সমাবেশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ। সমাবেশ থেকে নেতারা হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ এবং ১ জানুয়ারি থেকে নবম পে স্কেল কার্যকর করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর না হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়ারও হুমকি দেন কর্মচারী নেতারা।
সার্বিক বিষয়ে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি খায়ের আহমেদ মজুমদার জানান, নতুন পে স্কেলের দাবিতে সব কর্মচারী সংগঠনকে এক প্লাটফর্মে নিয়ে আসার জন্য আলোচনা চলমান। ইতোমধ্যে কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের নেতৃত্বে ১২ টি কর্মচারী সংগঠন এই দাবিতে আন্দোলনের জন্য জোটবদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের ছয়টি সংগঠন, ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী ফোরাম, বাংলাদেশ কর্মচারী উন্নয়ন ফোরাম, ১৭-২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী সমিতি, দপ্তরি কাম প্রহরীদের সংগঠন, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতি এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়ীজ লীগ। এছাড়া সরকারি গাড়িচালকদের কেন্দ্রীয় সংগঠন একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পে স্কেল কার্যকরের গেজেট না হলে কর্মবিরতির মতো কর্মসূচিতে যাবেন কর্মচারীরা, এমন ইঙ্গিত দিয়ে এই কর্মচারী নেতা বলেন, আমরা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমাদের দেয়া সময়সীমার মধ্যে যদি দাবি মানা না হয় তাহলে দাবি আদায়ে যেকোনো কর্মসূচি দিয়ে পিছপা হবো না।
১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বলেন, এই মুহূর্তে কর্মচারীদের সব সংগঠনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক চলমান। বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে দাবি মেনে না নেয়া হলে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ, ঢাকায় মহা-সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচি এবং কর্মবিরতির মতো কর্মসূচি আসতে পারে।
যেকোনভাবেই হোক আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন পে স্কেলের গেজেট দেখতে চায় কর্মচারীরা -মন্তব্য করে কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের মুখপাত্র আব্দুল মালেক বলেন, একটা আস্থার জায়গা প্রয়োজন। ডিসেম্বরে নতুন পে স্কেলের গেজেট হলে কর্মচারীরা আশ্বস্ত হবেন। সেক্ষেত্রে সরকার চাইলে ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে নতুন স্কেল দিতে পারে এবং আগামী অর্থবছরে ছয় মাসের এরিয়া দিয়ে দিতে পারেন। তবে নতুন পে স্কেল অবশ্যই দিতে হবে।