Logo
Logo
×

জাতীয়

কী থাকছে বহুল প্রত্যাশিত জুলাই আদেশে?

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০২:০৩ পিএম

কী থাকছে বহুল প্রত্যাশিত জুলাই আদেশে?

আরও পড়ুন
বহুল প্রত্যাশিত জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন ও আইনি ভিত্তি নিশ্চিতে আদেশ জারি হচ্ছে আজ। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ বিষয়ে ব্যাখ্যাসহ সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দেবেন। এরপর এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হবে। 

এর আগে বেলা ১১টায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে জুলাই আদেশটি পর্যালোচনা করে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেওয়া হবে। এই আদেশের ভিত্তিতেই একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। দলগুলোর মধ্যে বিরোধ মেটাতে আদেশে একধরনের ভারসাম্য আনা হচ্ছে।

এদিকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রশ্নে রাজনীতির মাঠ এখনো সরগরম। বুধবারও বিএনপি-জামায়াতের বক্তব্যে ছিল পরস্পরবিরোধী অবস্থান। সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারি করতে রোববার পর্যন্ত সরকারকে আলটিমেটাম দিয়েছে জামায়াতসহ ৮টি ইসলামি দল। এ সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানের কথা বলা হয়। এছাড়াও বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের মুখে অব্যাহত আছে হুমকি ও পালটা হুমকির বক্তব্য। 

আরও পড়ুন
এ অবস্থায় অন্যতম দুটি বড় দল হিসাবে তাদের দাবি মানার ক্ষেত্রে সরকার ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছে। এজন্য কয়েকটি প্রস্তাব সরকার বিবেচনায় নিয়েছে।

প্রথমত, সনদ বাস্তবায়নে গণভোট এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই দিনে হবে। দ্বিতীয়ত, পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে গঠিত হবে সংসদের উচ্চকক্ষ। 

গণভোটে জুলাই সনদের প্রস্তাবগুলোর ওপর বিভিন্ন দলের দেওয়া নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সনদ বাস্তবায়নে ২৭০ দিনের বাধ্যবাধকতার যে সুপারিশ করা হয়েছে, সেটিও তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু আগামী সংসদের জন্য সরকার একটি বিল তৈরি করে দেবে। এছাড়াও গণভোটের ব্যালটে একাধিক প্রশ্ন রাখা হতে পারে।

প্রসঙ্গত, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ২৮ অক্টোবর সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। 

এতে বলা হয়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সরকার একটি আদেশ জারি করবে। কিন্তু আদেশ জারির আগেই কিছু বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। এ অবস্থায় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে ৩ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর আহ্বান করা হয়। কিন্তু দলগুলো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। বরং প্রকাশ্যে তারা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।

সূত্র জানায়, এই সনদ নিয়ে শুরুতে উপদেষ্টা পরিষদ দ্বিধাবিভক্ত ছিল। ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার প্রধান উপদেষ্টার ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের জন্য কয়েকজন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর মধ্যে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান অন্যতম।

রাষ্ট্র সংস্কারে জুলাই সনদে ৮৪টি প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সুপারিশ অনুসারে প্রস্তাবগুলো তিন ভাগে বাস্তবায়ন হবে। ৯টি নির্বাহী আদেশে, ২৭টি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এবং সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত ৪৮টি প্রস্তাব গণভোটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে। পরবর্তী সংসদ দুটি দায়িত্ব পালন করবে। 

প্রথমত, সংবিধান সংস্কার পরিষদ এবং দ্বিতীয়ত, নিয়মিত আইনসভা। 

সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশে বলা হয়, আগামী সংসদে নির্বাচিত সদস্যরা প্রথম অধিবেশন শুরুর ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধান সংশোধন করবেন। এই সময়ের মধ্যে তারা সংবিধান সংশোধনে ব্যর্থ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জুলাই সনদের প্রস্তাবগুলো সংবিধানে প্রতিস্থাপিত হবে। সনদ বাস্তবায়নে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে সরকার একটি আদেশ জারি করবে। আদেশের নাম হবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’। এই আদেশের ওপর হবে গণভোট। ১৭ অক্টোবর সনদে ২৫টি রাজনৈতিক দল সই করে।

এদিকে এ নিয়ে ষষ্ঠবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন ড. ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বছরের ২৫ আগস্ট প্রথম ভাষণ দেন। পুরো প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ওইদিন বলেছিলেন কখন নির্বাচন হবে, তা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এর ১৫ দিন পর ১১ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয়বার টেলিভিশনের পর্দায় আসেন তিনি। ওইদিন তিনি রাষ্ট্র সংস্কারে ৬টি কমিশন করার ঘোষণা দেন। চলতি বছরের ২৫ মার্চ আবারও জাতির সামনে আসেন। ওইদিন জানান চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন। আড়াই মাস পর ৬ জুন আবারও জাতির সামনে ভাষণ দেন সরকারপ্রধান। এদিন স্পষ্ট করে বলে দেন, ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন। চলতি বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান। সেদিন তিনি জানান, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হবে জাতীয় নির্বাচন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার