গ্রেপ্তারের ৩ দিন পর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর মৃত্যু
প্যারোলে জানাজায় যুবলীগ কর্মী
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০৮ এএম
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জানাজায় অংশ নিয়েছেন যুবলীগের এক কর্মী।
সোমবার বিকালে দড়ি সোনাকান্দা মোড়ে স্ত্রীর জানাজার নামাজে অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ‘সশস্ত্র’ হামলার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় গ্রেপ্তার যুবলীগ কর্মী মো. সুমন।
উপজেলার সোনাকান্দা এলাকার বাসিন্দা ৪৫ বছর বয়সী সুমনকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তারের তথ্য দেয় পুলিশ।
এর তিন দিন পর রোববার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হাফেজা বেগমের মৃত্যু হয়। এর আগে দুপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার মৃত সন্তানকে বের করেন চিকিৎসকরা।
স্ত্রীর মৃত্যুর পর সোমবার প্যারোলে তিন ঘণ্টার জন্য বের হয়ে জানাজায় অংশ নেন ওই যুবলীগ কর্মী বলে জানান বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ‘সশস্ত্র’ হামলার মামলায় গ্রেপ্তারের পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
সুমনের বড় ভাই ইকবাল হোসেন বলেন, বর্তমানে কোনো পদে না থাকলেও যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তার ভাই। এর আগে সুমন ছাত্রলীগের বন্দর উপজেলার সোনাকান্দা ইউনিয়ন (বিলুপ্ত) শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
ইকবাল বলেন, বৃহস্পতিবার সুমন গ্রেপ্তার হবার পর টানা দুʼদিন থানা ও আদালত ছুটে বেরিয়েছেন তার নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হাফেজা বেগম। চলতি মাসের শেষের দিকে প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ থাকলেও গত শনিবার সকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি বলেন, হাসপাতালে পরদিন রোববার দুপুর ৩টার দিকে অস্ত্রোপচার হয় তার। তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেন। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাফেজা মারা যান।
“বাচ্চার মরদেহ রোববারেই দাফন করা হয়। স্ত্রীর জানাজায় প্যারোল পেয়ে আসতে পারছিল সুমন।”
জানাজায় অংশ নেওয়া স্থানীয়রা বলেন, জানাজার আগে স্বজনরা তাকে মৃত নবজাতকের ছবি মোবাইল ফোনে দেখান। তখন কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
স্থানীয়রা বলছেন, সুমন বন্দর উপজেলার যুবলীগ নেতা খান মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। এলাকার ব্রডব্যান্ড সংযোগের ব্যবসার একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে ‘হত্যা ও সশস্ত্র হামলা’ চালানোর অভিযোগে করা বেশ কয়েকটি মামলার আসামি মাসুদ বর্তমানে পলাতক। সুমন আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কিছুদিন আত্মগোপনে থাকলেও পরে তার এলাকায় ফিরে আসার তথ্য দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা।
বন্দর থানার ওসি লিয়াকত বলেন, পুলিশি প্রহরায় সুমনকে জানাজায় নেওয়া হয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।