বিদ্যুৎ বন্ধ করলে আদানির বিষয়ে হার্ডলাইনে যেতে পারে সরকার
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৭ পিএম
ভারতের আদানি গ্রুপের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। ১১ নভেম্বর থেকে ১,৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের হুমকির প্রেক্ষিতে আদানিকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি চূড়ান্ত করে সোমবার (১০ নভেম্বর) আদানি পাওয়ারকে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান যুগান্তরকে বলেছেন, আদানির চিঠি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ১১ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করলে সরকার আইনগত ব্যবস্থা নেবে। তবে সেই আইনগত ব্যবস্থা কী-তা তিনি প্রকাশ করতে চাননি। বলেন, চিঠির এখন খসড়া করা হচ্ছে। এটি চূড়ান্ত করে সোমবার (১০ নভেম্বর) আদানিকে পাঠানো হবে। তারপর এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাবে। এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি মন্তব্য করতে চাই না।
এর আগে ৩১ অক্টোবর আদানি পাওয়ারের ভাইস প্রেসিডেন্ট অনিমেষ অনুরাধ স্বাক্ষরিত এক চিঠি পিডিবির কাছে পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে ৪৯৬ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা) বকেয়া রয়েছে। এই টাকা ১০ নভেম্বরের মধ্যে পরিশোধ না হলে ১১ নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি, সরবরাহ বন্ধ থাকলেও বাংলাদেশ সরকারকে ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ পরিশোধ করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সরকার জানিয়ে আসছে, বিদ্যুৎ খাতের বিভিন্ন চুক্তি ও বিল পরিশোধের বিষয়গুলো তারা পুনর্বিবেচনা করবে।
এরই মধ্যে কয়লার মূল্য নিয়ে আদানি গ্রুপ ও পিডিবির মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। পিডিবির হিসাব অনুযায়ী আদানি কেন্দ্রের কয়লার দাম ধরা হচ্ছে টনপ্রতি ৬৫ ডলার, কিন্তু আদানি তা ৮০ ডলার ধরে বিল দিচ্ছে। এ কারণে দুই পক্ষের হিসাবে টনপ্রতি ১৫–২০ ডলারের পার্থক্য থেকে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ২৩৪ মিলিয়ন ডলার বিলকে ‘বিরোধপূর্ণ’ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
সরকারের অবস্থান, আদানি অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে বিল আদায়ের চেষ্টা করছে। বিরোধ নিষ্পত্তি না করেই পুরো পাওনা দাবি করায় বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের হুমকির পর এবার আদানির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে চুক্তির বিভিন্ন দিক পুনর্মূল্যায়নে যেতে পারে সরকার।