Logo
Logo
×

জাতীয়

নজিরবিহীন খরার কবলে ইরান, লোকশূন্য হতে পারে তেহরান

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩২ পিএম

নজিরবিহীন খরার কবলে ইরান, লোকশূন্য হতে পারে তেহরান
নজিরবিহীন খরার কবলে পড়েছে ইরান। বিশেষ করে রাজধানী তেহরানে তীব্র আকার ধারণ করেছে পানির সংকট। এ অবস্থায় শহরটি খালি করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান।

তিনি সতর্ক করে বলেছেন, বৃষ্টি না হলে রাজধানীতে পানির রেশনিং শুরু করতে হতে পারে। তবে রেশনিংয়েও কাজ না হলে তেহরান খালি করার কথা ভাবতে হবে।

তার এই মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে ইরানের সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তেহরানের সাবেক মেয়র গোলামহোসেন কারবাসচি বলেছেন, বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা একেবারেই হাস্যকর।

ইরানের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী ১০ দিনেও সেখানে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।

খালি হচ্ছে জলাধার, বিপর্যয়ের আশঙ্কা
তেহরানে দৈনন্দিন জীবনে এরই মধ্যে খরার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এক নারী বলেন, আমি টয়লেট ও অন্যান্য প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য পানির ট্যাঙ্কার কিনতে যাচ্ছি।

তেহরানের প্রধান জলাধার লাতিয়ান বাঁধে এখন ধারণক্ষমতার ১০ শতাংশেরও কম পানি রয়েছে। কারাজ বাঁধের অবস্থাও একই ধরনের শোচনীয়। বাঁধটির ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ-আলি মোয়াল্লেম বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার বৃষ্টিপাত ৯২ শতাংশ কমেছে। বর্তমানে রিজার্ভারে মাত্র আট শতাংশ পানি রয়েছে। এর বেশির ভাগই ‘ডেড ওয়াটার’ অর্থাৎ ব্যবহার অনুপযোগী।

রাতে বন্ধ হতে পারে পানি সরবরাহ
ইরানের জ্বালানি মন্ত্রী আব্বাস আলি আবাদি বলেছেন, কিছু রাতে হয়তো পানির প্রবাহ শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। অতিরিক্ত পানি ব্যবহারকারীদের জরিমানারও পরিকল্পনা করছে সরকার।

তিনি আরও জানান, তেহরানের শতবর্ষ পুরোনো পাইপলাইন ও অবকাঠামো থেকে পানি লিকেজ এবং সাম্প্রতিক ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো সংকটকে আরও গভীর করেছে।

অন্য প্রদেশেও একই অবস্থা
ইরানের জাতীয় জলবায়ু ও খরা সংকট কেন্দ্রের প্রধান আহমাদ ভাজিফেহ জানিয়েছেন, তেহরানের বাইরে পশ্চিম আজারবাইজান, পূর্ব আজারবাইজান ও মারকাজি প্রদেশের বাঁধগুলোর জলাধারেও পানি কমেছে।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর মাশহাদেও পরিস্থিতি ভয়াবহ। প্রদেশটির গভর্নর বলেছেন, মাশহাদের বাঁধগুলোর পানি মজুত আট শতাংশেরও কম।
স্থানীয় পানি করপোরেশনের প্রধান হোসেইন ইসমাইলিয়ান জানান, শহরের প্রধান চারটি জলাধার— তোরোখ, কারদেহ, দোস্তি ও আরদাক—এর মধ্যে কার্যত কেবল দোস্তি বাঁধে কিছু পানি আছে, বাকিগুলো প্রায় বন্ধ।

সংকট দীর্ঘদিনের
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানের এই পানিসংকট বহু দশকের পুরোনো। এমনকি আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিও ২০১১ সাল থেকে বারবার এ বিষয়ে সতর্ক করে আসছেন।

কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে আজ তেহরান, কারাজ ও মাশহাদের ১ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তবিক অর্থেই ‘কলের পানি ফুরিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে’ পড়েছেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার