ঝুলন্ত সেতুতে যুক্ত হচ্ছে মুন্সীগঞ্জ ও চাঁদপুর
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:১৯ এএম
দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত সেতুর মাধ্যমে সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হচ্ছে মুন্সীগঞ্জ ও চাঁদপুরের। ২০২৬ সালে শুরু হচ্ছে মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর এই সেতুর নির্মাণকাজ। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থেকে চাঁদপুরের মতলব উত্তর পর্যন্ত ১.৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং চার লেন বিশিষ্ট ক্যাবল স্টেইড এই সেতুর স্প্যানের দৈর্ঘ্য বাংলাদেশে অন্যতম বৃহৎ হবে। এতে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক যোগাযোগ আরও সহজ হচ্ছে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলা এবং নোয়াখালী ও ভোলা জেলার অংশ বিশেষের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সড়ক যোগাযোগ ও যাতায়াতের দূরত্ব, সময় ও ব্যয় হ্রাস পাবে। একই সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর যানবাহনের চাপ কমবে।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সম্প্রতি প্রকল্পটির বিস্তারিত ডিজাইন চূড়ান্ত করা হয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণ চলছে। মতলব উত্তর অংশের বিদ্যমান সড়কের প্রয়োজনীয় সমপ্রসারণের জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এর নির্বাহী প্রকৌশলীদের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
মুন্সীগঞ্জ-চাঁদপুরের ঝুলন্ত সেতু দেশের প্রথম ক্যাবল স্টেইড সেতু। নদীর মূল প্রবাহ গতিশীল রাখার লক্ষ্যে নদীতে কোনো পিলার স্থাপন না করার জন্য সেতুর স্প্যান ৪০০ মিটার রাখা হয়েছে এতে। যা দেশে সর্বোচ্চ। এরফলে নদীতে কোনো পলি জমবে না। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সেতু চালু হলে প্রথম বছরে দৈনিক ১৯,৮৩৫টি যানবাহন পারাপার করবে এবং জিডিপি বছরে ০.৭৩৮% বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও হাইমচর উপজেলায় অনুমোদিত দুইটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে পণ্য পরিবহন সহজতর করার মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অবদান রাখবে বলে মনে করছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় উপ-শহর গড়ে উঠবে। এতে আবাসনসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে রাজধানী ঢাকার উপর নির্ভরতা হ্রাস পাবে।
সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, সরকারের অন্যতম লক্ষ্য বৈষম্যহীন, ব্যয়-সাশ্রয়ী কানেক্টিভিটি গড়ে তোলা। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবেই এই সেতুটি নির্মাণ। এটি শুধু একটি সেতু নয়, এটি চাঁদপুরের অর্থনৈতিক প্রবেশদ্বার।
বর্তমানে সড়কপথে ঢাকার সাথে এই অঞ্চলের যে দীর্ঘ এবং সময়-সাপেক্ষ যোগাযোগ ব্যবস্থা, এই সেতুর মাধ্যমে তা হ্রাস পাবে এবং বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে। বিশেষ করে, চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর অঞ্চলের মৎস্য ও কৃষিজ পণ্যগুলো দ্রুত রাজধানীতে পৌঁছানো সম্ভব হবে, যা প্রান্তিক চাষি ও ব্যবসায়ীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করবে।
তিনি আরও বলেন, সেতুটি নির্মিত হলে এটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর চাপ কমাবে এবং এই অঞ্চলকে সরাসরি জাতীয় অর্থনীতির মূল স্রোতে নিয়ে আসবে। জনগণের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই প্রকল্পের জন্য বিশ্বমানের প্রকৌশল ও পরিবেশবান্ধব নকশা অনুসরণ করা হয়েছে।