Logo
Logo
×

জাতীয়

২০২৬ সালের কোন মাস থেকে নতুন পে স্কেল কার্যকরের সম্ভাবনা?

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম

২০২৬ সালের কোন মাস থেকে নতুন পে স্কেল কার্যকরের সম্ভাবনা?

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে নবগঠিত পে কমিশন দ্রুত কাজ শুরু করেছে। সরকারের নির্ভরযোগ্য সূত্র ও অর্থনৈতিক উপদেষ্টাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নতুন বেতন কাঠামো আগামী বছরের শুরুতেই, অর্থাৎ জানুয়ারি, ২০২৬ সাল থেকে কার্যকর হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের প্রস্তাবনা ও দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে চূড়ান্ত সুপারিশের প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।

জাতীয় বেতন কমিশন আগামী ডিসেম্বর, ২০২৫ মাসের মধ্যে তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দিতে চাইছে।

সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বেতন কার্যকর হওয়ার সম্ভাব্য সময়সূচি নিম্নরূপ—

চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কমিশন সুপারিশ জমা দেবে। এরপর ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারি মাসেই সেটি গেজেট আকারে প্রকাশ করবে সরকার। এর পরই সেটি কার্যকর শুরু হবে।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, পে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত অর্থ সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে, যার কাজ ডিসেম্বরেই শুরু হবে।

তিনি নিশ্চিত করেন, গেজেট প্রকাশের ওপর বাস্তবায়ন নির্ভর করলেও এটি আগামী বছরের শুরুতেই কার্যকর হতে পারে।

এদিকে দ্রুত পে স্কেল বাস্তবায়নের পাশাপাশি সরকার প্রশাসনিক সংস্কারেও গুরুত্ব দিচ্ছে। নতুন বেতন কাঠামোর সঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের কাজের জবাবদিহি ও দক্ষতা বাড়ানোর জন্য নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতি ‘জিপিএমএস’ চালু করার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন বেতন কার্যকর হওয়ার আগেই এই প্রশাসনিক সংস্কারের কাজটিও চূড়ান্ত হবে।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন জাতীয় বেতন কাঠামো প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে, তাদের মেয়াদেই নবম পে স্কেল গেজেট আকারে প্রকাশ করা এবং তা কার্যকর করা।

এ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, নতুন পে স্কেল ২০২৬ সালের শুরু (জানুয়ারি, মার্চ বা এপ্রিল) থেকে কার্যকর হতে পারে। এ বিষয়ে সরকার গঠিত পে কমিশন জোরেশোরে কাজ করছে।

প্রায় এক দশক পর গঠিত এই পে কমিশন সরকারি চাকরিজীবীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি বেতন কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চলেছে। ২০২৫ সালের পে কমিশন গঠনের ফলে এখন শুধু বেতন বৃদ্ধি নয়, বরং গ্রেডভিত্তিক বৈষম্য কমিয়ে বেতন অনুপাত পুনর্গঠনের দিকেও নজর দিচ্ছে সরকারি কর্মচারীরা।

জানা গেছে, নতুন কাঠামোয় শুধু মূল বেতন নয়, চিকিৎসা, শিক্ষা ও পদোন্নতিসহ বিভিন্ন ভাতায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসছে।

নবম জাতীয় বেতন স্কেল বাস্তবায়িত হলে কিছু সুবিধা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর বিকল্প হিসেবে প্রস্তাবে ‘সাকুল্য বেতন’ কিংবা ‘পারিশ্রমিক’ নামে একটি নতুন বেতন কাঠামো গঠনের কথা বলা হয়েছে। এই কাঠামোতে বিদ্যমান বেতন কাঠামোর ভাতাসহ আর্থিক ও অনার্থিক কোনো সুবিধা থাকবে না। প্রস্তাবিত এই পদ্ধতি অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে চালু আছে।

কমিশন মনে করে, সরকারি সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য কর্মকর্তাদের প্রদেয় সম্মানী বা অতিরিক্ত ভাতা নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।

কমিশনের মতে, এসব দায়িত্ব মূল কর্মপরিধির অংশ, তাই অতিরিক্ত অর্থ প্রদান অযৌক্তিক।

এই খাতে সরকারের প্রতিবছর প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়, যা নতুন কাঠামোয় বাতিলের প্রস্তাব রয়েছে।

নবম পে স্কেল চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে মতামত গ্রহণের জন্য আজ সোমবার জাতীয় বেতন কমিশন (পে কমিশন) সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১৩টি সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসছে।

বাংলাদেশ সচিবালয়ে সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই তথ্য নিশ্চিত করে পৃথক চিঠি দিয়েছেন জাতীয় বেতন কমিশন ২০২৫-এর সদস্যসচিব এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. ফরহাদ সিদ্দিক।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার