যুক্তরাষ্ট্রে আইসের অভিযানে বাংলাদেশি আটক
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০২:২৪ এএম
যুক্তরাষ্ট্রে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস)-এর হাতে প্রবাসী বাংলাদেশি পলাশ সরকার আটক হয়েছেন। পেনসিলভেনিয়ার একটি আদালতে হাজিরা দিতে এসে তিনি আইসের হাতে আটক হন বলে জানা গেছে। আটক হওয়ার কারণে পলাশের ইন্দোনেশিয়ান স্ত্রী, সন্তান ও পরিবার বিপাকে পড়েছেন।
এদিকে, আইসের হাতে আটক বাংলাদেশির পরিবারের সহায়তায় একটি ‘গোফান্ড’ তহবিল খোলা হয়েছে। আর্থিক সংকটে পড়ে এই তহবিলটি খুলেছেন আটক পলাশ সরকারের স্ত্রী নিজেই।
জানা যায়, বাংলাদেশি প্রবাসী পলাশ সরকার চলতি বছরের ৩ জুলাই পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়া শহরে আইস কর্তৃপক্ষের হাতে আটক হন। হঠাৎ আটক হওয়ার পর থেকেই তার পরিবার চরম দুরাবস্থায় পড়ে।
পলাশ সরকারের বাড়ি বাংলাদেশের সিলেট জেলায়। ২০২১ সালে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং রাজনৈতিক আশ্রয়ের (অ্যাসাইলাম) জন্য আবেদন করেন। তবে নির্ধারিত ইন্টারভিউয়ের দিনই আইস কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠিয়ে দেয়।
পলাশের স্ত্রী একজন ইন্দোনেশিয়ান নাগরিক। তাদের পাঁচ বছর বয়সী এক পুত্র সন্তান রয়েছে। বর্তমানে তিনি চরম অর্থকষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
তিনি জানিয়েছেন, আটক হওয়ার পর থেকে পলাশকে পর্যায়ক্রমে নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, লুইজিয়ানা হয়ে বর্তমানে টেক্সাসে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে প্রায় ৭০ জনের সঙ্গে এক ঘরে তিনি আছেন। চার মাস পার হয়ে গেছে। আইনি ফি ও দৈনন্দিন খরচ চালাতে গিয়ে আমরা আমাদের সব সঞ্চয় হারিয়েছি- বলেন তিনি।
তিনি জানান, “আমি নিজেই আমাদের সন্তানের যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করছি, কিন্তু এখন আর কোনো সম্পদ অবশিষ্ট নেই। আমার স্বামীর জামিন ও আইনি সহায়তার জন্য জরুরিভাবে আর্থিক সাহায্য প্রয়োজন।”
ইতোমধ্যে ‘গোফান্ড’ তহবিলে অনেকে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন। সংগৃহীত অর্থ আইনজীবীর ফি, দৈনন্দিন খরচ এবং শিশুর মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যয় করা হবে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের মতে, এ ধরনের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বহু অভিবাসী পরিবারের অনিশ্চিত বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে অভিবাসনবিরোধী পদক্ষেপ আরও কঠোর হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ অভিবাসীকে ডিপোর্ট করা হয়েছে এবং ১৬ লাখ অভিবাসী স্বেচ্ছায় দেশত্যাগ করেছেন।
শুধু ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম মাসেই ৩৭ হাজার ৬৬০ জন অভিবাসীকে দেশান্তরিত করা হয়। বর্তমানে আইসের হেফাজতে রয়েছেন ৫৯ হাজার ২০৭ জন অভিবাসী। এসব ঘটনার ফলে দক্ষিণ এশীয় ও লাতিনো সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।