প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা পদ্ধতিতে বড় পরিবর্তন
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:১৩ পিএম
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রথম ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বছর পরীক্ষার কাঠামো, বিষয়ভিত্তিক নম্বর বিভাজন ও পরীক্ষার সময়ে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, নিয়োগ পরীক্ষা লিখিত ও মৌখিক দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত পরীক্ষা হবে মোট ৯০ নম্বরের, যেখানে বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান এবং সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি) চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এর মধ্যে বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ২৫ নম্বর করে মোট ৫০ নম্বর এবং গণিত ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে ২০ নম্বর করে মোট ৪০ নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার সময়সীমা হবে ৯০ মিনিট।
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নির্বাচিত প্রার্থীরা ১০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। লিখিত পরীক্ষায় পাস নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫, যা মোট নম্বরের ৫০ শতাংশ। মৌখিক পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একইভাবে ৫ নম্বর পেতে হবে পাসের জন্য।
এর আগে, গত বছর প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৭৫ নম্বরে; আর মৌখিক পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ ছিল ২৫ নম্বর। এর মধ্যে এসএসসি, এইচএসসি ও স্নাতকের ফলাফলের ওপর ১০ নম্বর। আর অবশিষ্ট ১৫ নম্বর ছিল প্রার্থীর ব্যক্তিত্ব, প্রকাশ ক্ষমতা, সাধারণ জ্ঞান ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে দক্ষতার ওপর।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আবেদন করবেন যেভাবে
এদিকে ৫ নভেম্বর সহকারী শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এতে আগ্রহী প্রার্থীগণকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ০৮ নভেম্বর ২০২৫ (সকাল ১০:৩০ মি:) এবং শেষ হবে ২১ নভেম্বর ২০২৫ (রাত ১১:৫৯ মি:); http://dpe.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আনলাইনে Application Form পূরণের নির্দেশনা পাওয়া যাবে। উক্ত নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক অনলাইনে Application Form পূরণ করে Submit করা হলে ওয়েবসাইট হতে প্রার্থীর User IDসহ Unpaid স্ট্যাটাস সম্পন্ন Draft Applicant's Copy তৈরি হবে যা প্রিন্ট করে আবেদনে প্রদত্ত তথ্য যাচাই করতে হবে।
আবেদন ফি জমা দানের পূর্বে Draft Applicant's Copy একাধিকবার পড়ে প্রার্থী তার প্রদত্ত তথ্যের যথার্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন। কোন ভুল পরিলক্ষিত হলে তার বিপরীতে আবেদন ফি জমা দেয়া যাবে না এবং এই বিজ্ঞপ্তির ২নং শর্ত অনুসরণ করে নতুন করে Application Form সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণপূর্বক নতুন User ID সংবলিত Unpaid স্ট্যাটাস সম্পন্ন Draft Applicant's Copy প্রিন্ট নিয়ে পুনরায় প্রদত্ত তথ্য যাচাই করতে হবে; নির্ভুলভাবে পূরণকৃত Application Form-এর বিপরীতে প্রদত্ত User ID ব্যবহার করে পরবর্তী ৭২ ঘন্টার মধ্যে Draft Applicant's Copy-তে প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক যে কোন টেলিটক প্রি-প্রেইড মোবাইল নম্বর হতে SMS-এর মাধ্যমে অফেরতযোগ্য ১০০.০০ (একশত) টাকা আবেদন ফি এবং টেলিটকের সার্ভিস চার্জ ও ভ্যাট ১২.০০ (বার) টাকাসহ একত্রে মোট ১১২.০০ (একশত বার) টাকা পরিশোধ করতে হবে।
আবেদন ফি পরিশোধের পর আবেদনে প্রদত্ত মোবাইল নম্বরে SMS এর মাধ্যমে আবেদনকারীকে User ID-সহ একটি Password দেয়া হবে। এরপরে http://dpe.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটের “ Download Applicant's Copy" ট্যাবে ক্লিক করে মোবাইলে প্রাপ্ত User ID ও Password Submit করে Paid স্ট্যাটাস সম্পন্ন Final Applicant's Copy পাওয়া যাবে। Final Applicant's-এর রঙিন প্রিন্ট কপি নিয়োগ প্রক্রিয়ার শেষাবধি আবশ্যিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। কেবলমাত্র আবেদন ফি পরিশোধের পরেই আবেদনটি চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়েছে বলে গণ্য হবে এবং আবেদনে আর কোন তথ্য সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন বা একই প্রার্থীর নতুনভাবে Application Form পূরণের সুযোগ থাকবে না।
প্রথম ধাপে ছয় বিভাগের ১০ হাজার ২১৯টি পদে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। প্রথম ধাপের বিভাগগুলো হলো রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর। দ্বিতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এ দুই বিভাগে শূন্য পদ রয়েছে ৪ হাজার ১৬৬টি।
এর আগে চলতি বছরের ২৮ আগস্ট ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রণালয়। তিন দিন পর ৩১ আগস্ট গঠিত হয় আট সদস্যের কেন্দ্রীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ কমিটি, যার চেয়ারম্যান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
পরে ২ নভেম্বর প্রকাশিত সংশোধিত বিধিমালায় সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক পদ বাদ দেওয়া হয় এবং কিছু শব্দগত পরিবর্তন আনা হয়। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন বিধিমালা ও বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতা, নৈতিক মানদণ্ড ও আচরণগত শুদ্ধতার বিষয়টি এবার বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে।