শিক্ষকদের বদলির সভায় যে সিদ্ধান্ত হলো
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৫১ পিএম
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলির সফটওয়্যার তৈরি নিয়ে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে সভা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সভায় ইনডেক্সধারী সব শিক্ষকের বদলির জন্য একটি মডিউল (সফটওয়্যার) তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মাধ্যমিক-২ শাখার যুগ্মসচিব, বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার উপসচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপ-পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপস্থিত এক কর্মকর্তা বলেন, টেলিটকের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। তারা শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা নিয়ে গেছেন। নীতিমালার সবকিছু পর্যালোচনা করে একটি মডিউল বানানো হবে। মডিউল তৈরির পর কর্মশালা হবে। সেখানে সবকিছু ঠিক থাকলে পরবর্তীতে শিক্ষকদের বদলির কার্যক্রম শুরু করা হবে।
বদলির মডিউল তৈরি করতে কতদিন লাগতে পারে এমন কোনো আলোচনা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সময়সীমা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে দ্রুত মডিউল তৈরির কথা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। মডিউল তৈরি হলেই হবে না, শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পর সফটওয়্যার কীভাবে ডিটেক্ট করবে, একজন শিক্ষক চাকরিজীবনে তিনবার বদলির সুযোগ পাবেন, সেটি কীভাবে যাচাই করা হবে; এ বিষয়গুলোও দেখতে হবে। এক্ষত্রে কিছুটা সময় লাগবে।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘যে মডিউল তৈরি করা হবে, সেখানে এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত এবং ইনডেক্সধারী সব শিক্ষককেই বদলি করা হবে। সফটওয়্যার সেভাবেই তৈরি করতে বলা হয়েছে।
এদিকে দ্রুত বদলি কার্যকর করার লক্ষ্যে একযোগে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকতের বিভিন্ন সংগঠন একত্রিত হয়ে আন্দোলনে নামছেন। আগামী ১০ নভেম্বর বাংলাদেশ বদলি-প্রত্যাশী শিক্ষক ঐক্যজোট ব্যানারে আন্দোলনে নামবেন তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রভাষক মো. সরোয়ার বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের আহবানে এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বদলি চালুর দাবিতে বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে সভা করা হয়েছে। সভায় সবাই একত্রিতভাবে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ১০ নভেম্বর এ কর্মসূচি পালিত হবে।’
জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের বদলির কোনো সুযোগ নেই। এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ পেতেন তারা। তবে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ বন্ধ করে দেয় সরকার। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েন নিজ বাড়ি থেকে শত শত কিলোমিটার দূরে চাকরি করা শিক্ষকরা। একইসঙ্গে নারী শিক্ষকদের ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ বন্ধ হওয়ার পর বদলি চালুর দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষকদের একাধিক সংগঠন। দীর্ঘ আন্দোলনের পর সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বদলি চালুর উদ্যোগ নেন। প্রাথমিকভাবে এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নানা শর্তে বদলি চালুর জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করে সরকার। এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারির পর মাউশির এক পরিচালকের মাধ্যমে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। তবে এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ায় নতুন করে সফটওয়্যার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ অবস্থায় দ্রুত বদলি কার্যকর করার দাবিতে আবারও আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিলি এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত বিভিন্ন সংগঠন।