Logo
Logo
×

জাতীয়

মায়ের কান্নার ভিডিও দেখে ফারহানকে ফেরত দিয়ে গেল অপহরণকারী

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০২:১২ এএম

মায়ের কান্নার ভিডিও দেখে ফারহানকে ফেরত দিয়ে গেল অপহরণকারী

মায়ের কান্নাকাটির ভিডিও দেখে সন্তানকে ফেরত দিয়ে গেছে অপহরণকারী চক্র। এমনটাই বলছেন হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার কাটিহারা গ্রামের উদ্ধার হওয়া শিশু ফারহানের বড় বোন রেখা বেগম। বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাইয়ে হলেও ফারহান (১২) কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে বড়বোন রখা বেগমের কাছে থেকে স্থানীয় মাদরাসায় হিফজ বিভাগে পড়াশোনা করতো। গত ২০ সেপ্টেম্বর বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাই কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে মাদরাসায় যাওয়ার জন্য মা রাহেলা বেগম তাকে নৌকায় উঠিয়ে দিয়েছিলেন।

কিন্তু ফারহান আর ফেরেনি। তাকে অপহরণ করে একটি শিশু অপহরণকারী চক্র।

এরপর রাহেলা বেগম জিডি করলেও দুই মাস ধরে সন্তানের খোঁজ পাননি। নিখোঁজ সন্তানের খোঁজে পাগল প্রায় মা ছেলের ছবি নিয়ে যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন।

ছেলেকে খুঁজতে, চষে বেড়াচ্ছিলেন দেশের বিভিন্ন স্থানে। গত ৩১ অক্টোবর রাজধানীর নিকেতন পার্কের কাছে ছেলের ছবি নিয়ে ঘুরছিলেন রাহেলা বেগম ও ফারহানের বড় বোন রেখা বেগম। 

এসময় কন্টেন্ট ক্রিয়েটর মাহসান স্বপ্ন রাহেলা বেগমের একটি ভিডিও ধারণ করেন। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, রাহেলা বেগম পাগলের মতো কান্নাকাটি করছিলেন।

ছেলেকে যে কোনো মূল্যে ফেরত চান। প্রয়োজনে নিজের কিডনিও দিয়ে দেবেন- এমন কথাও বলছিলেন।

অপহৃত ফারহানের বড়বোন রেখা বেগম বলছেন, ‘আমার মায়ের কান্নাকাটির এই ভিডিওটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফারহানকে ফেরত দিয়ে যায় অপহরণকারী চক্র। ফারহান আমাদের জানিয়েছে একটি চক্র তাকে দুই মাসের বেশি সময় ধরে একটি টিনের ঘরে আটকে রেখেছিল।

রেখা বেগম গতকাল (সোমবার) বিকেলে বললেন, ‘আমার বিয়ে হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে। ফারহান আমার কাছে থেকেই স্থানীয় তাহারাবাদ হাফিজিয়া মাদরাসায় পড়াশোনা করতো। সে হবিগঞ্জের লাখাইয়ে আমাদের গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিল। ২০ সেপ্টেম্বর আমার মা ফারহানকে নৌকায় উঠিয়ে দেয়। এরপর থেকে নিখোঁজ হয়। আমরা তাকে হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় খুঁজি। অষ্টগ্রাম থানায় একটি জিডিও করি। কিন্তু ওকে পাইনি। এরপর ঢাকায় গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকি। আমার মাকে কান্নাকাটি করতে দেখে এগিয়ে আসে মাহসান স্বপ্ন। সে একটি ভিডিও করে। এরপর আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুঁজে পাই।’

মূলত ভিডিওটি অপহরণকারীদের চোখে পড়ে। সেই ভিডিওটি ফারহানকে দেখায় চক্রের সদস্যরা। ফারহান তার মায়ের কান্নাকাটি দেখে সে নিজেও কান্নাকাটি করতে থাকে। 

রেখা বেগম বলছেন, ‘ফারহানকে অপহরণকারী চক্র ভিডিওটি দেখায়, ওইসময় ফারহান আমার মাকে কান্নাকাটি করতে দেখে সেও কান্নাকাটি শুরু করে। এরপর তাকে কামরাঙ্গীর চরে ব্রিজের কাছে সিএনজি থেকে নামিয়ে দিয়ে যায়।  ফারহান অসুস্থ। ওর সামনের দুটো দাঁত ভাঙা। পায়ের ও হাতের একটি নখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাকে আমরা চিকিৎসা করাচ্ছি।’

ফারহানকে খুঁজে পাওয়ার পর কন্টেন্ট ক্রিয়েটর মাহসান স্বপ্ন'র কাছে এমন আরো অনেক ফোন আসছে, অনেক মেসেজ আসছে, যারা তাদের স্বজন কিংবা বাচ্চা নিখোঁজের কথা বলছেন।  সোমবার বিকেলে এ বিষয়ে মাহসান স্বপ্ন বলছেন, ‘আমি এমন ভিডিও এর আগেও করেছি। সেদিন নিকেতন পার্কে ওই মাকে কান্নাকাটি করা দেখে এগিয়ে যাই ও ভিডিও করি। ভিডিওটি মানুষ প্রচুর শেয়ার করেছে, ফলে বাচ্চাটাকে খুঁজে পাওয়াটা সহজ হয়েছে। এই ঘটনার পর আমাকে অন্তত ৫০ জন নক দিয়েছে যাদের বাচ্চা হারিয়ে গেছে। এটা খুবই অ্যালার্মিং।’

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার